ঘূর্ণিঝড় আইডার দাপটে বিপর্যস্ত আফ্রিকা মহাদেশের মোজাম্বিক, জিম্বাবুয়ে ও মালাবি। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ভয়াবহ আতঙ্ক হয়ে উঠেছে কলেরা। এরই মধ্যে শুধু মোজাম্বিকেই মৃতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। তুলনামূলক কম প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে মালাবিতে।
মোজাম্বিকের বন্দর-শহর বেইরার উপর দিয়ে গত সপ্তাহে ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় আইডা। তার পরে জিম্বাবুয়ে ও মালাবির দিকে সরে যায় সেটি।
রোববার তুরস্কভিত্তিক এক সংবাদমাধ্যম জানায়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে শুধু মোজাম্বিকেই ৪১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। জিম্বাবুয়েতে প্রাণহানির শিকার হয়েছেন ২৫৯ জন। আর মালাবিতে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আইডার আঘাতে মোজাম্বিকের বেইরা শহরের ৯০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে হওয়া বন্যায় ভবন ও বাঁধ ধসের মতো ঘটনা ঘটেছে। বেইরা এলাকা কার্যত পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সমুদ্রে সমতল থেকে অবস্থান নিচে হওয়ায় এলাকাটি এমনিতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ।
রেডক্রসের তথ্য অনুযায়ী, বেইরা ও আশেপাশের এলাকার ৯০ শতাংশ ‘পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে’। প্লাবিত হয়েছে পুরো এলাকা। ঘূর্ণিঝড় আইডার তাণ্ডবের পর সেখানকার বাড়ির ছাদ ও গাছের ওপরে আটকে পড়া শত শত মানুষকে উদ্ধারের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্ধার কাজ চালাতে হচ্ছে তাদের।
২০ মার্চ মোজাম্বিকের উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বন্যার কারণে গাছের ওপর আটকে পড়া নারীরা তাদের শিশু সন্তানদেরকে বাঁচাতে উদ্ধারকারী নৌকার দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছেন। প্রায় মাথা সমান পানি থেকেও মানুষজনকে টেনে তোলা হচ্ছে। তবে বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার তৎপরতা।
রয়টার্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত জিম্বাবুয়েতে মৃতের সংখ্যা ২৫৯ জন হওয়ার কথা জানা গেছে। আর মালাবিতে প্রাণহানি তুলনামূলকভাবে কম; ৫৬ জন। বন্যার পানি না কমা পর্যন্ত বেইরা শহরে আইডার কারণে ঠিক কী মাত্রার ক্ষতি হয়েছে তা পুরোপুরিভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হবে না। এদিকে বন্যার জেরে বেড়েছে কলেরার প্রকোপও। শুক্রবার পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বেইরাতেই অন্তত ৫০ হাজার জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন। বন্যার জেরে জমা নোংরা পানির কারণে কলেরার প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বৃষ্টি ও বন্যার ফলে শৌচ-ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় কলেরার জীবাণু আরও তাড়াতাড়ি ছড়াচ্ছে।