ইস্তানবুলের হাজিয়া সোফিয়া জাদুঘরের নাম বদলে মসজিদ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
গতকাল রোববার একটি টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এ প্রস্তাব দেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
সেক্ষেত্রে শহরটির ঐতিহ্যবাহী এ স্থানটির প্রবেশমূল্যে ছাড় দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অসম্ভব কিছু না। কিন্তু আমরা এটা জাদুঘরের নামে করব না। হাজিয়া সোফিয়া মসজিদের নামে।
তিনি বলেন, পর্যটকরা ব্লু মসজিদে আসা যাওয়া করতে পারবেন। এজন্য তাদের অর্থ দিতে হবে কিনা জানতে চাইলে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ভালো, আমরা হাজিয়া সোফিয়ার মতো একই কাজ করবো।
হাজিয়া সোফিয়া সাবেক গির্জা ও মসজিদ। বর্তমানে সেটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে কোরআন তেলাওয়াত ও নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হলে প্রায়ই খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা এটির অসাধারণ স্থাপত্যশিল্প উপভোগের ওপরই বেশি জোর দিচ্ছেন। কিন্তু এটিকে নতুন করে মসজিদে রূপান্তরিত করা হলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেবে।
এমনকি গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের পুরনো শত্রুতা নতুন করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে।
স্থানটি আন্তঃধর্মীয় ও কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ষষ্ঠ শতকে খ্রিস্টান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের শাসনামলে হাজিয়া সোফিয়া নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন এটি গ্রিক অর্থোডক্স গির্জা হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
কিন্তু ১৪৫৩ সালে উসমানীয় খলিফাদের কাছে কনস্টান্টিনোপেলের পতন ঘটলে সেটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়।
১৯৩৫ সালে তুর্কি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রতিষ্ঠাতা মসজিদটিকে জাদুঘর বানিয়ে ফেলেন।বর্তমান এরদোগান সরকারের আমলে সেটিকে ফের মসজিদের রূপে ফিরিয়ে আনা নিয়ে আলোচনা চলছে।
গত কয়েক বছর ধরে তুর্কি মুসলমানরা সেখানে নামাজ আদায় করছেন। তারা জাদুঘরটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করার দাবি জানিয়ে আসছেন।
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হাজিয়া সোফিয়ায় গেল ৮৫ বছরের মধ্যে ২০১৫ সালেই প্রথমবারের মতো একজন আলেম কোরআন পাঠ করেন।
এর পর থেকে তুরস্কের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর রমজানে সেখানে কোরআন পাঠ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন।