খাবারই কাজ করবে ওষুধের

জীবন যাপন ডেস্ক

তুলসীপাতা ও ভেষজ তেলে তৈরি করা ফ্রাইড রাইস এবং কালো জলপাই’র (ব্ল্যাক অলিভ) রাইস
তুলসীপাতা ও ভেষজ তেলে তৈরি করা ফ্রাইড রাইস এবং কালো জলপাই’র (ব্ল্যাক অলিভ) রাইস। ছবি : সংগৃহিত

খাবারকে শুধুমাত্র ক্ষুধা মেটানোর জন্য নয়, একে ওষুদ হিসেবেও কাজে লাগাতে চান তিনি। তাইতো সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ৬ মাস গবেষণা করে খাবারের পুষ্টিগুণকে অক্ষত রেখে তার ঔষধি গুণ বাড়ানোর উপায় আবিষ্কার করেছেন। আর তারই ব্যবহার করেছেন নিজের রেস্টুরেন্টেও।

প্রচলিত ফাস্টফুড খাবার খেয়েও যে সুস্থ থাকা যায় এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায় তেমনই এক নজির সৃষ্টি করেছেন হারবাল মেডিসিনের ডাক্তার এবং উদ্যোক্তা আজিজুর রহমান। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের কাছে যমুনা ফিউচার পার্কের পাশে অবস্থিত এল ডোরাডো রিভাইসড নামের দোকানে নিজের আবিষ্কৃত নানা ফর্মুলা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান আজিজুর রহমান।

universel cardiac hospital

আজিজুর রহমানের আবিষ্কৃত এই ফর্মুলার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তুলসিপাতা ও ভেষজ তেলে তৈরি করা ফ্রাইড রাইস এবং কালো জলপাইয়ের (ব্ল্যাক অলিভ) রাইস। এই খাবারের খাদ্যগুণ সম্পর্কে আজিজুর রহমান বলেন, তুলসির গুনাগুণ সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি।

প্রচুর ঔষুধিগুণ সম্পন্ন এই পাতার রস দিয়েই মুলত আমাদের ফ্রাইড রাইসের একটি আইটেম করা হয়েছে ‘ব্যাসিল লিফ ফ্রাইড রাইস’। এই ফ্রাইড রাইসের একটা গুণাবলী যদি আমি বলি যে, এই ফ্রাইড রাইস আমাদের পাকস্থলীর খাদ্য পচন প্রক্রিয়াকে (হজম) স্বাভাবিক করে তোলে।

তাই খাবারে অনীহা এমন কেউ যদি নিয়মিত কয়েকদিন এই খাবার গ্রহণ করেন তাহলে খুব শিগগিরই তার দৈনন্দিন খাদ্যচাহিদা বেড়ে যাবে। এছাড়াও তুলসী পাতা একাধারে, হৃদরোগের এন্টিওক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে এবং দাঁতের জন্যও অনেক উপকারী এই পাতা।

আজিজুর রহমান বলেন, তুলসি পাতা দিয়ে রান্না করা হলেও কেউই খেয়ে কোনোভাবে ধরতে পারবে না, এতে তুলসিপাতা ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ, আমরা ঔষুধি গুনাগুণ ঠিক রেখে একেবারে প্রাকৃতিকভাবে তুলসিপাতাকে প্রক্রিয়াজাত করে এমনভাবে তৈরি করি, যাতে রান্নার পর এর স্বাদ কিংবা গন্ধ কোনোটাই যাতে কাউকে বিরক্ত করতে না পারে।

তিনি আরও বলেন, আমার আরও একটি গবেষণার পর আমি আরেকটি এমনই আইটেম বের করতে পেরেছি। যেটা হচ্ছে ব্ল্যাক অলিভ রাইস। এই রাইসের প্রধান গুণাবলি হচ্ছে, আমাদের ব্ল্যাক অলিভ রাইস মানুষের হৃদযন্ত্রের (হার্টের) জন্য খুবই উপকারি।

কারণ, আমরা অনেকের হয়তো জানি, ব্ল্যাক অলিভের মধ্যে সেইসব ঔষুধি গুনাগুণ রয়েছে যা আমাদের হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতে পারে। এছাড়াও এই জলপাইয়ে আছে ভিটামিন ই ও আয়রণের উৎস। তাইতো এও ব্ল্যাক অলিভ আমাদের ত্বক ও শরীরের জন্য বেশ উপকারি।

কেন এমন গবেষণা এই প্রশ্নের জবাবে আজিজুর রহমান বলেন, দেশের প্রায় সব খাবারের দোকানগুলোতেই খাবার তৈরির প্রণালীতে থাকে টেস্টিং সল্ট। যেটাকে প্রায় বেশিরভাগ ডাক্তাররাই ধীর গতির বিষ হিসেবে উল্লেখ করেন। কারণ, এই খাবার প্রতিনিয়ত খেতে থাকলে ধীরে ধীরে শরীরের নানা ভাবে ক্ষতি করে এই টেস্টিং সল্ট।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যেমন ধরুন খাবার হজমে বাধা দেওয়া, মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া, শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। এমনকি ধীরে ধীরে এটা ক্যান্সারেও আক্রান্ত করতে পারে। তাই খাবার বিক্রির পাশাপাশি ক্রেতাদের স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখাটা আমার কর্তব্য বলে আমি মনে করি। আর সেই যায়গা থেকেই আমার এই গবেষণা আর এই আবিষ্কার।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে