ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলা: নিজ গ্রামে ফারুকের দাফন সম্পন্ন

সারাদেশ ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডে মসজিদে নিহত ফারুকের কফিন
নিউজিল্যান্ডে মসজিদে নিহত ফারুকের কফিন। ছবি : সংগৃহিত

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আল নূর মসজিদে জুমার নামাজের সময় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত নারায়ণগঞ্জের ওমর ফারুকের মরদেহ নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০ টায় বন্দর উপজেলার সিরাজদৌলা মাঠে জানাজা শেষে পৌনে ১১টায় বন্দর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। ওমর ফারুকের পরিবারের স্বজনরা ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শত শত এলাকাবাসী এতে অংশ নেন।

universel cardiac hospital

মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওমর ফারুকের লাশ এসে পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলে মধ্য রাতে বন্দর উপজেলার রাজবাড়ি এলাকায় নিজ বাড়িতে আনা হয়। তখন থেকেই নিকট আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে আসতে শুরু করেন। সকালে গোসল শেষে ওমর ফারুকের মরদেহ বাড়ির সামনে রাখা হলে এলাকবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে তার বন্ধুবান্ধব এবং স্বজনরা বাড়িতে এসে ভিড় জমান শেষবারের মতো ওমর ফারুকের মুখটি দেখতে। 

এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ওমর ফারুকের মা রহিমা বেগম, তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জামান নিহা ও তিন বোনসহ শোকার্ত স্বজনরা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তারা বলেন, কেউই আশা করেননি ওমর ফারুক এভাবে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরবে। একমাত্র উপার্জনকারী ওমর ফারুককে হারিয়ে পরিবারের অসহায় অবস্থার কথাও তারা তুলে ধরেন।

ওমর ফারুকের স্ত্রী সানজিদা জাহান নিহা বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তিকে হারিয়ে আমরা এখন অসহায়। সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি, সরকার যেন আমাদের এই পরিবারটির কথা ভুলে না যায়। এর বেশি আমার আর কিছু বলার নেই।

জানাজার পর পরিবারের স্বজনদের সমবেদনা জানাতে বাড়িতে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরশেনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এসময় আইভী বলেন, ওমর ফারুক নিশ্চিত শহীদের মৃত্যুবরণ করেছে। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করবেন। এই ধরনের মৃত্যু আমরা কখনোই আশা করিনি।

গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীর গুলিতে ৫০ জন নিহত ও ৪৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি ছিলেন ৫ জন। এদের মধ্যে একজন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রাজবাড়ি এলাকার ওমর ফারুক। পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান বাবা হারা তিন বোনের একমাত্র ভাই ওমর ফারুক। ২০১৭ সালে দেশে এসে বিয়ে করেন একই এলাকায়। গত বছরের ১৬ নভেম্বরে আবারো দেশে এসে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন কাটিয়ে গত ১৮ জানুয়ারি ফিরে যান নিউজিল্যান্ডে। এই ছিল পরিবারের সাথে ওমর ফারুকের শেষ দেখা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে