ছাত্রীকে উত্ত্যাক্ত ও ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ফয়সাল আজম ফাহিন ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল শেখের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল শেখের অনুসারী রাজিব হোসেন ও তার দুই সহপাঠীর বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে উত্ত্যাক্তের অভিযোগ তুলে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ফয়সাল আজম ফাইনের অনুসারী সুব্রত ঘোষ ও ফজলে রাব্বির উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় ও হাতাহাতি হয়। পরে দুই পক্ষের কর্মীরা বঙ্গবন্ধু হলে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ান।
এতে নোবেল শেখ সমর্থিত ছাত্রলীগের কর্মী রাজিব হোসেনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। রাজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে ফাহিন সমর্থিত সুব্রত ঘোষ ও ফজলে রাব্বি আহত হন। তারা উভয়েই ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। পরে তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে সংঘর্ষের সূত্রপাত উত্ত্যাক্ত করাকে কেন্দ্র করে হলেও মূলত ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে বলে সংগঠনটির একাধিক সূত্র জানায়।
ছাত্রলীগ সূত্র বলছে, মঙ্গলবার সকালে বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোন্নাফ আল তুষার কিবরিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল শেখের বিরুদ্ধে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করা এবং একছত্র আধিপত্য বিস্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ফয়সাল আজম ফাহিন, বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেন, বঙ্গবন্ধু হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মৃতিশ চন্দ্রের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশ।
জানতে চাইলে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ফয়সাল আজম ফাহিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না দেয়ায় সকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তবে রাতের সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে এটা জড়িত নয়।
এ বিষয়ে বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল শেখ বলেন, একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করতে এবং ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে নানাভাবে তৎপর রয়েছে। তবে কোনোভাবেই ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে দেয়া হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, এক ছাত্রীকে উত্ত্যাক্ত করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি জানান।