বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আসন্ন রমজানে ভোগ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন।
আজ বুধবার সচিবালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আসছে রমজানে ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি রোধে এ বৈঠকটির আয়োজন করা হয়।
রাস্তায় ট্রাকে চাঁদাবাজি একটি বড় হেডেক উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাস্তায় ট্রাকে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও এ বিষয়ে যথেষ্ট শক্ত কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই চাঁদাবাজি মানব না। প্রতিটি পয়েন্টে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হবে। চাঁদাবাজির জন্য মানুষদের বেশি টাকা দিয়ে পণ্য ক্রয় করতে হবে কেন?
টিপু মুনশি বলেন, আমরা দেখি রংপুর বা বগুড়ায় যে সবজির দাম ১০ টাকা কেজি, তা ঢাকায় এসে দাম বেড়ে হয়ে যায় ৪০ টাকা কেজি। বিক্রেতাদের প্রশ্ন করলে তারা বলে, পথে পথে চাঁদাবাজি হয়। এই চাঁদাবাজির জন্য আর ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নাই।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা একটি ক্লু দিয়েছেন, সেটা আমরা ফলো করব। আর সেটা হচ্ছে মিল থেকে যে দামে পণ্য বিক্রয় করা হয় তা থেকে প্রতি কেজিতে পঞ্চাশ পয়সা হোল সেলাররা লাভ করবে। আর সেই পণ্যের ওপর আড়তদাররা যদি একটি ছোট অঙ্কের লাভ করে ছেড়ে দেয় এবং রিটেইলার (খুচরা ব্যবসায়ি) যদি প্রতি কেজি বা এককের পণ্যের ওপর পরিবহন খরচসহ বিভিন্ন খরচ বিবেচনা করে এবং সর্বোচ্চ ৫ টাকা লাভের পর ভোক্তাদের কাছে বিক্রয় করে তাহলে ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নাই।
মন্ত্রী বলেন, আমি এখানে দেখছি ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। এখানে ব্যবসায়ীদের মুখ থেকেও একই কথা আসছে। আমরা সবাই মিলে কাজ করতে পারলে এটার সমাধান সম্ভব। আর এটা হতে হবে। আমরা যদি মনে করি রমজান মাস একটি পবিত্র মাস, এই মাসে মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নেওয়া ঠিক নয়। এটা যদি আমরা মেইনটেইন করি তাহলে আল্লাহ তায়ালাও আমাদের ওপর খুশি হবেন।
তিনি বলেন, দুস্থ সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সে বিষয়ে আমরা চিন্তা করি। আর আমি একজন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি। যদি ভোগ্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক না থাকে তাহলে আমি বিব্রত হব। আমি আপনাদের অনুরোধ করি বাণিজ্যমন্ত্রীর মুখে যেন চুনকালি না পড়ে।
মন্ত্রী বলেন, শীর্ষ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- ভোগ্য পণ্যের দামের চেইনটা যদি দেখভাল করা যায়, তাহলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি হবে না। আর আমরা এটা গুরুত্বসহকারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেখব। আর স্তরভিত্তিক মূল্য চেইনের বিষয়ে ব্যবসায়ীরাও একমত হয়েছেন। এমনকি আড়তদারদের অনেকে বলেছেন, তারা কেজি প্রতি ৫০ পয়সা লাভ করতে পারলেই যথেষ্ট। ফলে রমজানে ভোগ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা আমরা দেখছি না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পজেটিভ আছে, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঙ্গে কাজ করে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করে যাব। চাঁদাবাজি ঠেকাতে থানা, এসপি লেভেল ছাড়াও প্রয়োজনে আমরা একটি কল সেন্টার করে দেব। যাতে করে যে কেউ চাঁদাবাজি হচ্ছে তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।