নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গণধর্ষণের ঘটনার ইন্ধনদাতা রুহুল আমিনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল বুধবার নোয়াখালীর ২ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নবনিতা গুহের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক জাকির হোসেন।
বুধবার রাত পৌনে ১০টায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তদন্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত নয়জন আসামি ছাড়াও তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়া আরও সাতজনসহ মোট ১৬ জনকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন আসামি পলাতক থাকায় তাঁদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তদন্ত কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, পলাতক ওই দুজন ছাড়া আর যাঁদের নাম অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন মো. সোহেল, মো. হানিফ, স্বপন, চৌধুরী, বেচু, বাসু ওরফে কুড়াইল্যা বাসু, আবুল ওরফে আবুইল্যা, মোশারফ, ছালা উদ্দিন, রুহুল আমিন, হাসান আলী ওরফে বুলু, জসিম উদ্দিন, হেঞ্জু মাঝি ও মুরাদ। তাঁদের মধ্যে রুহুল আমিনসহ ১১ জন আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। আর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।
তদন্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, অভিযোগপত্রভুক্ত এসব আসামির মধ্যে এজাহারে নাম থাকা তিন আসামি হানিফ, চৌধুরী ও মোশারফকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত আসামিদের নামের পরই রুহুল আমিনসহ বাকি সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এদিকে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নির্যাতনের শিকার নারী এবং মামলার বাদী তাঁর স্বামী। বুধবার রাতে তাঁরা বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত প্রত্যেক আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এসব আসামির শাস্তি না হলে চরের নারীরা আরও বেশি নির্যাতনের শিকার হবে।’
গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই নারীকে নির্মমভাবে মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। পরদিন ৩১ ডিসেম্বর দুপুরে তাঁকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই দিন তাঁর স্বামী বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখ করে চরজব্বর থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি তদন্ত করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় হুমকির জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে নির্যাতনের শিকার নারী জানিয়েছেন।