অর্থ আত্মসাতের মামলায় মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিচার শুরু হচ্ছে আগামী বুধবার। নাজিবের আইনজীবী ফারহান রেয়াদ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
গত ১২ ফেব্রয়ারিতে তাঁর এ বিচার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এক আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে সেটা বাতিল হয়ে যায়। এ ঘটনার পর এখন ক্ষমতাসীন মাহাথির সরকার সমালোচনার মুখে পড়ে।
নাজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মালয়েশিয়ার ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদের (ওয়ানএমডিবি) কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থেকে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার নিজের পকেটে পুরেছেন। গত মে মাসে নির্বাচনের পরাজয়ের পর তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ভি সীথাম্বাম জানান, বিচারেরর জন্য প্রসিকিউটররা প্রস্তুত এবং বুধবার সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সাক্ষীদের ডাকা হবে।
আগামী সপ্তাহের বিচারে নাজিব রাজাককে ওয়ানএমডিবির সাবেক ইউনিট এসআরসি ইন্টারন্যাশনাল থেকে ৪২ মিলিয়ন রিংগিত আত্মসাতসহ সাতটি অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে। এখন জামিনে থাকা নাজিবের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার মধ্যে এটি একটি।
নাজিবের বিরুদ্ধে মোট ৪২টি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, যার অধিকাংশই ওয়ানএমডিবির অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত। সাবেক ওই প্রধানমন্ত্রী যদি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে তাঁকে বেশ কয়েক বছর কারাগারে থাকতে হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরসহ অন্তত ছয়টি দেশ ওয়ানএমডিবির অর্থ পাচার ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে। নাজিব রাজাক ২০০৯ সালে ওই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবীরা বলেন, তহবিল থেকে চুরি করা অর্থ ব্যক্তিগত জেট, বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট, পিকাসো ও মনেটের শিল্পকর্ম এবং নাজিবের স্ত্রী রোজমা মানসরের গয়না কেনায় ব্যবহার করা হতে পারে।
গত বছর মে মাসের জাতীয় নির্বাচনে নাজিবের দল ইউনাইটেড মালয়েস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে ধরাশায়ী হয়। এরপর থেকেই নতুন সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা, বিশেষ করে ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি নিয়ে জোরেশোরে তদন্ত শুরু হয়। এমএসিসির তদন্তকারীরা বেশ কয়েক দফায় নাজিবের বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ অর্থ, অলংকারসহ ২৭ কোটির বেশি মার্কিন ডলার মূল্যমানের সম্পদ জব্দ করেন। সর্বশেষ ওয়ানএমডিবি দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসেবে ৪০৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে কর্তৃপক্ষ।