এই প্রজন্মর কাছে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওয়েব সিরিজ! বিশেষ করে কলকাতা কেন্দ্রিক এই জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি। সেন্সরের কাঁচি, বাড়াবাড়ি কোনওটাই না থাকায় দেখানো হচ্ছে চূড়ান্ত ভায়োলেন্স ও উদ্দাম নগ্নতা।
ভারতে সম্প্রতি এই প্রশ্নেই সরব হয়েছে মুম্বাই হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। বিচারপতি ভূষণ ধর্মাধিকারী এবং বিচারপরতি মুরলীধর গিরাতকর ঘোরতর আপত্তি তুলেছেন ওয়েব সিরিজে যথেচ্ছ নগ্নতা, যৌনতা ও হিংসা প্রদর্শনের বিষয়ে।
জানা যায়, আইনজীবী দিব্যা গোন্টিয়া ওয়েব সিরিজে যথেচ্ছ হিংসা ও যৌনতা প্রদর্শনের বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তাঁর বক্তব্য— নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম প্রভৃতি প্ল্যাটফর্মে যে সব ওয়েব সিরিজ দেখানো হচ্ছে, তার অনেকগুলিতেই পর্নোগ্রাফিক কন্টেন্ট রয়েছে। সেই সঙ্গে অশালীন ভাষা ও অঙ্গভঙ্গী যা ভারতীয় সংস্কৃতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী। সেই সঙ্গে এই সব ওয়েব সিরিজ রাজনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য সংবেদনশীল বিষয়গুলিতেও সমস্যা সৃষ্টি করে। কিছুক্ষেত্রে ধর্মীয় ভাবাবেগেও আঘাত হানে। যেখানে টিভি, সংবাদপত্র, সিনেমা ইত্যাদির প্রতি নজরদারি করার বন্দোবস্ত রয়েছে, সেখানে ওয়েব সিরিজ ছাড় পাবে কেন?
জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বিচারপতিরা জানান, এই বিষয়ে কোথাও একটা নির্দেশিকা থাকার প্রয়োজন রয়েছে। জাতীয় অথবা আন্তর্জাতিক, যে কোনও ওয়েব সিরিজ সম্প্রচারের আগে তা স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিৎ। কোনও সিরিজই অনলাইনে বিনা বিচারে চলে যেতে পারে না!
তবে এসব মানতে নারাজ কলকাতার নির্মাতারা। তারা ওয়েব সিরিজের নির্মাণের নামে অর্ধ পর্ন চলচ্চিত্র বানিয়ে চলেছে। বলা যায় এসব নির্মাণের জন্য কলকাতা কেন্দ্রিক একটা ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়িয়ে গেছে। যাদের কাছ হচ্ছে যৌন আবেদনময় ফিল্ম নির্মাণ করা ও ওয়েব সিরিজ নাম দিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রকাশ করা।
অনেক প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রীই এইসব ওয়েব সিরিজের দিকে ঝুঁকছেন শুধু অর্থের কারণে। দুপুর ঠাকুরপো’র মতো ওয়েব সিরিজে ঝুমা বৌদি চরিত্রে স্বস্তিকা খোলামেলা চরিত্রেই শুধু অভিনয়য় করেননি, আবেদনময়ী হয়ে টেনেছেন তরুণ-যুবকদের। এরপরে একই ভাবে এসেছেন ভোজপুরী জনপ্রিয় নায়িকা বাঙালি মেয়ে মোনালিসা।
অবাধ যৌনতাকেই সম্বল করেই কলকাতায় বাংলা ওয়েব সিরিজ বানাতে শুরু করেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য। শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী সৃষ্টি ‘চরিত্রহীন’-এর আদলে এই নতুন ওয়েব সিরিজের নামও দেয়া হয় ‘চরিত্রহীন।’
হ্যালো নামের ওয়েব সিরিজে কলকাতার জনপ্রিয় দুই অভিনেত্রী অভিনয়য় করেছেন। এদের মধ্যে একজন রাইমা সেন অন্যজন প্রিয়াঙ্কা সরকার। দুজনই পশ্চিমবঙ্গে বেশ জনপ্রিয়। হ্যালো ওয়েব সিরিজে তারা সেই একইভাবে যৌন দৃশ্যে মেতেছেন।
ক্রমাগত ওয়েব সিরিজ নির্মাণের প্রবণতা যেমন বাড়ছে তেমন বাড়ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যৌনতার পসরা প্রদর্শন। এইসব বিষয়ে নির্দেশনা না থাকায় মূল ধারার অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা যেমন উদ্দাম যৌনতার প্রদর্শন করে যাচ্ছেন তেমনি কলকাতার আরেকটি নির্মাতা শ্রেণি ওয়েব সিরিজে সমকামে উদ্ধুদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।