রাজধানীতে গ্রিন লাইন বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের
দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগ আজ খারিজ
করে দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের
নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
বেপরোয়া বাসের চাপায় পা
হারানো রাসেলকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা দিতে গত ১২ মার্চ গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন
হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাসেলের অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং তাঁর
কাটা পড়া পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও গ্রিন
লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বহন করতে বলা হয়।
৫০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনটি ১৪ মার্চ চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে। সেদিন চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। একই সঙ্গে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষের করা আবেদনটি ৩১ মার্চ (আজ) আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগে আবেদনটির ওপর শুনানি হয়।
আদালতে গ্রিন লাইনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও মো. ওজিউল্লাহ।
রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড খবির উদ্দিন ভূঁইয়া।
রাসেলের পা হারানোর পর গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকার দলীয় সাবেক সাংসদ আইনজীবী উম্মে কুলসুম হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানিতে ৬ মার্চ রাসেল আদালতকে বলেছিলেন, পা হারানোর পর এখন পর্যন্ত গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ তাঁকে একটি টাকাও দেয়নি। খোঁজখবর নেয়নি, চিকিৎসার ব্যয়ও বহন করেনি।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে রাসেলকে কেন এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রাসেল একটি প্রতিষ্ঠানের ভাড়া গাড়ি চালাতেন। গত বছরের ২৮ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর হানিফ উড়ালসড়কে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারান তিনি।
ঘটনার পর রাসেল বলেছিলেন, ফেরার সময় যাত্রাবাড়ীতে গ্রিন লাইন পরিবহনের একটি বাস তাঁর গাড়িকে ধাক্কা দেয়। পরে গাড়ি থামিয়ে বাসের সামনে গিয়ে বাসচালককে নামতে বলেন তিনি। তখন তাঁর সঙ্গে বাসচালকের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাসচালক গাড়ি চালাতে শুরু করেন। রাসেল সরতে গেলে উড়ালসড়কের রেলিংয়ে আটকে যান। এ সময় রাসেলের পায়ের ওপর দিয়ে বাস চলে যায়। এরপর অস্ত্রোপচার করে তাঁর বাঁ পা কেটে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় রাসেলের বড় ভাই আরিফ সরকার বাসচালক কবির মিয়ার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় গত বছরের ২৮ এপ্রিল মামলা করেন।