প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেখানে সেখানে শিল্প কারখানা স্থাপন করে কৃষি জমি নষ্ট করা যাবে না। আজ রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শিল্প মেলা-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি চাই- কৃষি থাকবে, শিল্পায়নও থাকবে। আমরা চাই- বেশি বেশি শিল্পকারখানা গড়ে উঠুক। তবে কৃষিজমি নষ্ট করে এখানে-সেখানে শিল্প গড়ে উঠুক আমি তা চাই না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়ন ছাড়া কর্মসংস্থান সম্ভব নয়। এজন্য দরকার কৃষিনির্ভর শিল্প। কৃষি ও খাদ্যপণ্য উৎপাদন শিল্পের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
তিনি বলেন, কৃষির দরকার আছে। কারণ কৃষির মাধ্যমে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে হবে। আবার আমরা শিল্পায়নও চাই। কারণ শিল্পায়ন ছাড়া কোনো দেশ উঠে দাঁড়াতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মাটি-পানি সব কিছুই ব্যবহার করা যায়। আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রয়েছে। আমাদের দেশে শিল্প রয়েছে, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের অনেক বিকাশ হয়েছে। কিন্তু বৃহৎ শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি। তাই বৃহৎ শিল্পকারখানা গড়ে তোলা যায়, সে জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।
শিল্পায়নের জন্য ব্যাংক সুদহার কমানোর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ব্যাংকের সুদ কমানোর উদ্যোগ নিলাম। ব্যাংকগুলোকে আমরা বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও করে দিলাম। কিছু ব্যাংক সুদের হার ৯ শতাংশে নামল। অন্য ব্যাংকগুলো করল না। তারা সুযোগ চাইল, কিন্তু সুদের হার কমাল না। এখন তাদের দিকে নজর দিতে হবে। তারা ঠিকমতো ভ্যাট দেয় কিনা দেখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের দেশে ৭৮ লাখ শিল্পকারখানা বেসরকারি খাতে রয়েছে। আমরা বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। বিদ্যুৎ-বিমান, হেলিকপ্টার, শিল্পকারখানা, টেলিভিশন-রেডিও বলুন- ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খাত আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আমরা চাই বেশি বেশি বিনিয়োগ হোক, কর্মসংস্থান হোক।
তিনি বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেয় না। তারা শিল্পকারখানা ঠিকই স্থাপন করেন; কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন না। বর্জ্যের কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, নদী নষ্ট হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কিছু টাকা খরচ হবে। এখানে শিল্প-মালিকদের কার্পণ্য কেন সেটি আমার একটি প্রশ্ন। আমাদের দেশ ও পরিবেশ তো বাঁচাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ শোধ না করার প্রবণতা অনেকের মধ্যে রয়েছে। এই প্রবণতা আমাদের দূর করতে হবে। ঋণ ফেরত দিলেই ব্যাংকগুলো সহজেই সুদের হার কমাতে পারবে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা সবচেয়ে বেশি ব্যাংক-বীমা করেছি। তাদের সুযোগ-সুবিধাও দিয়েছে। কৃষকরা এখন ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন না। শিক্ষকরা ব্যাংক থেকে বেতন নিচ্ছেন।