রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ২৪ টিম ‘বিল্ডিং কোড’ না মেনে নকশা অনুমোদন ছাড়া গড়ে তোলা বহুতল ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে নামছে।
আজ রোববার দুপুরে রাজউক ভবনের রাজউক অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সভায় গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।
সভায় বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে এবং ঢাকা শহরে বিদ্যমান ভবনসমূহের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আশু করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক আলোচনা করা হয়।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, নিয়ম না মেনে কোন এলাকায় কতগুলো ভবন নির্মিত হয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে আমরা সর্বোচ্চ সময় রেখেছি ১৫ দিন। আশা করছি ১৫ দিনের আগেই প্রতিবেদন দিতে পারব।
তিনি বলেন, সমালোচনা রয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। কিন্তু আমরা প্রতিবেদনগুলোকে আলোর মুখ দেখাব। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে তা প্রকাশ করব৷
মন্ত্রী বলেন, যেসব ভবন পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী করা হয়নি সেসব ভবনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। নিয়মের বাইরে থাকা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০৮-এর মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা বা গ্যারেজ রাখার কোনো বিধান ছিল না। সে সব ভবনের জন্য নতুন করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ভবনে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আগে শুধু মালিক বা ডেভেলপারকে শাস্তি দেয়া হতো। এখন ওই ভবন নির্মাণের সময় দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর ও অন্যান্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
ভবন ব্যবহারকারীদের অনুরোধ করে মন্ত্রী বলেন, যে বিল্ডিং এ অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নাই, সিঁড়ির ব্যবস্থা নাই, দ্রুত নেমে আসার ব্যবস্থা নাই, অনুমোদনহীন একটি ফ্ল্যাট, সেটা আপনারা ব্যবহার করবেন না। আমরা চাই মানবিক দায়িত্ববোধে সবাই এগিয়ে আসুন।
তিনি বলেন, বনানীর ঘটনায় দেখেছি অনেকেই উপর থেকে লাফ দিয়ে পড়েছে। নিচে নেট ছিল না। যদিও এটি আমাদের বিষয় নয় তারপরেও মনে হয় আমাদের আরও সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, রাজউকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় সকল রেকর্ড থাকতে হবে। যেসব ভবনের রেকর্ড পাওয়া যাচ্ছেনা, সেগুলো আবার পরিদর্শন করে রেকর্ড নথিভুক্ত করবো। ১ মে থেকে রাজউকের সকল সেবা ডিজিটাইজেশন হবে।
রাজউককে ঢেলে সাজানো হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রাজউককে ঢেলে সাজাতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। কিভাবে রাজউককে গতিশীল করা যায় তা নিয়ে আমরা কাজ করবো। স্ব স্ব ক্ষেত্রে রাজউকের কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে৷ প্রতিটি এলাকার প্রতিটি নির্মাণ কাজের তথ্য প্রতিদিন আপডেট করতে হবে। প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। প্রতি মাসের কাজের মূল্যায়ন হবে। যদি কোনো ভবন নিয়মের বাইরে গড়ে উঠে সেই ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ অতীতে নোটিশ দিয়ে ক্ষান্ত হলেও এখন তা হবে না।
সভার আগে রাজউক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন রেজাউল করিম। বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইয়াকুব আলী পাটওয়ারী, রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।