পঞ্চগড়ে স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তানকে কুপিয়ে জখম করেছেন এক বাবা। এতে ঘটনাস্থলেই রত্না নামে ছয় মাসের এক কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পালিয়ে যান শিশুটির বাবা নাজিমুল ইসলাম (৪০)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রী ও দুই কন্যাকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের জয়ধরভাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- নাজিমুলের স্ত্রী রশিদা খাতুন (২৮), তার বড় মেয়ে নাজিরা খাতুন (৮) এবং মেজো মেয়ে রিয়া মনি (৫)।
পুলিশ ও গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা জানায়, ১০ বছর আগে ওই এলাকার নাজিমুল ইসলাম ও রশিদা বেগমের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর মধ্যে তাদের সংসারে জন্ম নেয় তিন কন্যা সন্তান। সোমবার ভোরে ঘুম থেকে উঠেই রশিদা বেগমের সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয় নাজিমুল ইসলামের।
একপর্যায়ে ছোট মেয়ে রত্না আক্তারকে মাথায় তুলে মাটিতে আছাড় মারেন বাবা নাজিমুল। এতে ঘটনাস্থলে শিশুটি মারা যায়। পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী রশিদা এবং দুই মেয়েকে কুপিয়ে জখম করেন নাজিমুল। স্ত্রী ও সন্তানদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে পালিয়ে যান নাজিমুল।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত গৃহবধূর বাবা রশিদুল ইসলাম, পারিবারিক কলহের জেরে নাজিমুল ইসলাম এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার পর নাজিমুল ইসলামসহ তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।
তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে নাজিমুল ইসলাম আমার মেয়েকে নির্যাতনসহ মারপিট করত। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে পক্ষে বিপক্ষে একাধিক মামলাও হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে নাজিমুল ইসলাম আমার মেয়ে এবং নাতনিদের ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে ঘটনাটি মর্মান্তিক। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের ওসি আবু আককাছ আহমেদ বলেন, ঘটনায় অভিযুক্ত নাজিমুল ইসলামসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যরা পলাতক। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর নানার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।