আজ সোমবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে রংপুরের কেন্দ্রগুলোতে মোমবাতির আলোয় পরীক্ষা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বেশির ভাগ পরীক্ষা কেন্দ্রে এই চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, আগের রাতের কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টিতে রংপুরের সবগুলো ফিডে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিড়ে পড়ে গেছে। এসব কারণে সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট তৈরি হয়। তবে বেলা ১২টার পর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হয় বলে নিশ্চিত করেন নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন।
এদিকে, সোমবার সকালে রংপুর নগরীর শালবন এলাকার সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়- পরীক্ষার্থীরা মোমবাতি হাতে কেন্দ্রে প্রবেশ করছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও আলো স্বল্পতার কারণে মোমবাতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে, সচেতন অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন- কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং বিদ্যুৎ বিভাগের গাফলতির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের দায়িত্ববানদের আগে থেকে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
এ ব্যাপারে সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ অধ্যাক্ষ মোবাখখারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, মধ্যরাতে ঝড় হওয়ায় নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। এতে তাদের ভীষণ সমস্যা হয়েছে। তবে আমরা বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে কথা বলে দ্রুত সংযোগ চালু করার জন্য বেশ কয়েকবার চাপ দিয়েছি।
সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের মতো রংপুর মহানগরীসহ আশপাশের উপজেলাগুলোর পরীক্ষা কেন্দ্রেও একই চিত্র ছিল বলে জানা গেছে। বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎ-এর আওতাভুক্ত এলাকাগুলোতে মধ্যরাত থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
অনেক স্থানে কালবৈশাখী ঝড়ে ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা ও বিদ্যুৎ সংযোগের খুঁটি উপড়ে গেছে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড, রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী (জিএমডি) মো. শাহজাহান আলী বলেন, মধ্যরাতে ঝড়ের তাণ্ডবে রংপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমরা জরুরি ভিত্তিতে পৌনে ১২টার দিকে সংযোগ সচল করি।
রংপুর বিভাগের আট জেলার ১৯৯টি কেন্দ্রের এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ২৮ হাজার ৫৬ জন, মানবিক বিভাগে ৮১ হাজার ১৩৭ জন এবং ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ১৫ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন।
এছাড়া রংপুর জেলায় আলিম ১০টি কেন্দ্রে ১৯৩২ জন, এইচএসসি (বিএম) ১৭টি কেন্দ্রে ৮৬৪২ জন এবং এইচএসসি (বিজনেস স্টাডিজ ও ভোকেশনাল) দুটি কেন্দ্রে ২১২ জন পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।