খালেদা জিয়ার মুক্তির পর বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ!

ডেস্ক রিপোর্ট

বিএনপি
বিএনপি। ফাইল ছবি


দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে যে আলোচনা চলছে তার সঙ্গে বিএনপির বিজয়ীদের শপথ নেয়ার বিষয়টিও রয়েছে।

দলীয়প্রধান খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির পর জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন বিএনপির নির্বাচিতরা। দলের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদেরও এ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হবে- এ কারণে প্রকাশ্যে তারা মুখ খুলছেন না।

বিএনপির একটি সূত্রের দাবি, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে যে আলোচনা চলছে তার সঙ্গে বিএনপির বিজয়ীদের শপথ নেয়ার বিষয়টিও রয়েছে।

জানা যায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির পাশাপাশি ২৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে করা ৯০ হাজার মামলা প্রত্যাহার এবং স্বাভাবিক রাজনীতি করার নিশ্চয়তা পেতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে সার্বিক পরিস্থিতি নির্ভর করছে বেগম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর।


তারা দলের ক্লিন ইমেজসম্পন্ন এক নেতার কাঁধে ভর করে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি এবং দলের নির্বাচিতদের শপথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইছেন।

অপর একটি সূত্রের দাবি, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে যারা প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন তাদের অনেকেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না। তারা দলের ক্লিন ইমেজসম্পন্ন এক নেতার কাঁধে ভর করে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি এবং দলের নির্বাচিতদের শপথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইছেন।

এজন্য ওই ক্লিন ইমেজের নেতাকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহল থেকে অ্যাডভোকেসি করা হচ্ছে। বিএনপির সিনিয়র নেতারা শেষ বয়সে তাদের রাজনীতি ধরে রাখতে এ প্রক্রিয়ায় শামিল হচ্ছেন।

কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়ার কাছে তারা যতটা মূল্যায়িত হন, তারেক রহমানের কাছ থেকে তারা সেটা পান না, পাবেনও না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে এ পথে হাঁটছেন তারা।

সূত্র জানায়, গত ৩১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তির পর বিএনপির নেতাদের শপথের বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর গত সোমবার বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের একটি বৈঠকেও এ নিয়ে চুলচেরা আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচিত মোশারফ হোসেন বলেন, দলের নির্বাচিতরা শপথ নিচ্ছেন না, স্থানীয় নির্বাচনেও আমরা অংশ নিচ্ছি না। কেউ নিলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। তা হলে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে?

শপথ গ্রহণের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. হারুন উর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের মহাসচিবও নির্বাচিত, তার কাছে জিজ্ঞাসা করেন। আমরা তো দলীয় শৃঙ্খলার মধ্যে থাকি। উনিও তো একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে নির্বাচিত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা উকিল আব্দুস সাত্তার বলেন, বিষয়টি নিয়ে দলীয়ভাবে আলোচনা হচ্ছে। তবে আমাদের এখনও কিছু বলা হয়নি।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান শপথ নেয়ায় তাদের বেইমান ও প্রতারক হিসেবে অভিহিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এরা বেইমান, জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে, প্রতারণা করেছে। এটা তার নিজের দলের সঙ্গে, জনগণের সঙ্গে এবং ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রতারণা।

আইন অনুযায়ী, সংসদ বসার তিন মাসের মধ্যে শপথ নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ হিসেবে আগামী ৩০ এপ্রিলের আগেই শপথ নিতে হবে ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী প্রার্থীদের। ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিজয়ীদের মধ্যে ছয়জন বিএনপির।

তারা হলেন- বগুড়া-৬ আসনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বগুড়া-৪ আসনে মোশাররফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে মো. হারুন অর রশীদ, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাহিদুর রহমান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে