“স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে না। এটি পরিবর্তন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত। তবে আমরা অফিসিয়ালি এখন বলতে পারব না। এ বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৪ বছর পার না হতেই এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।
জানা গেছে, বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় সংসদে সংশোধনের পর কার্যকর করা হবে।
সূত্র মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়া নিয়ে নানা বিতর্ক ও সমালোচনা দেখা দেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে আজ শনিবার ওই মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে না। এটি পরিবর্তন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত। তবে আমরা অফিসিয়ালি এখন বলতে পারব না। এ বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
২০১৫ সালে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন-সংক্রান্ত পাঁচটি আইন সংশোধন করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৪ বছর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন উন্মুক্তভাবে হওয়ার ধারা ভেঙে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় প্রতীকে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য ২০১৫ সালে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন-সংক্রান্ত পাঁচটি আইন সংশোধন করা হয়।
সিটি ও পৌরসভার মেয়র নির্বাচন দিয়ে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের শুরুটা হয়েছে। সর্বশেষ এটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রয়োগ করা হয়। তবে এ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আইনগুলো সংশোধন করে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এদিকে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে যাওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।
এ প্রসঙ্গে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে আমাদের তৃণমূল পর্যন্ত মারামারি পৌঁছে গেছে। এর ফলে মনোনয়ন বাণিজ্য এমন পর্যায়ে গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনেও এমন কোনো ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না যে অর্থ ছাড়া ভোট দিয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি কলুষিত হয়ে গেছে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।
আইনটি যখন পরিবর্তন করা হয়েছে তখন কি এসব বিষয় সরকার বিবেচনা করেনি কিংবা কোনো বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া হয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বহুবার বলেছি। আমাদের কোনও মতামতই সরকার আমনে নেয়নি। হয় আবেগ কিংবা একটা চিন্তা করেই হুট করে সরকার এই আইন পরিবর্তন করেছে।