পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জয় পেয়েছে মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হকের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত ফোরাম।
উৎসবমুখর পরিবেশে দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে শনিবার রাত নয়টার পর চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। এর মধ্য দিয়ে রুবানা বিজিএমইএর ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি হতে চলছেন।
আজ শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় ভোট গণনা শুরু হয়। এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
১৯৫৬ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৪৯২ জন
ভোটগ্রহণ শেষে বিজিএমইএ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের সদস্য ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর সাংবাদিকদের জানান, ১৯৫৬ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৪৯২ জন। ভোটের হার ৭৬ দশমিক ২৭ শতাংশ।
ডিজিটাল পদ্ধতির ভোট গণনায় চূড়ান্ত ফলে দেখা গেছে, ১৩৯৩ ভোটের মধ্যে সম্মিলিত ফোরামের এম এ রহিম পেয়েছেন ১২৯৫ ভোট, রুবানা হক পেয়েছেন ১২৮০ ও আরশাদ জামাল দিপু পেয়েছেন ১২৬৮ ভোট। প্যানেলটির মধ্যে ২৬ তম পরিচালক হিসেবে সর্বনিম্ন ১১২৪ ভোট পেয়েছেন ফয়সাল সামাদ।
বিপরীতে স্বাধীনতা পরিষদের প্যানেল লিডার জাহাঙ্গীর আলম তার প্যানেল থেকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন ৪২২টি। এই প্যানেল থেকে ৫০০ এর বেশি ভোট পাননি কেউ। মোট ভোট পড়া ১৪৯২টির মধ্যে বাতিল হয়েছে ৯৯টি।
আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলামিন, পরিচালনা বোর্ডের সদস্য নিহাদ কবীর, সম্মিলিত ফোরামের টিম লিডার মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক ও স্বাধীনতা পরিষদের টিম লিডার জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
এর আগে সম্মিলিত-ফোরামের প্যানেল লিডার রুবানা হক পূর্ণ প্যানেলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে তিনি বলেন, যা প্রত্যাশা করেছিলাম তারচেয়ে বেশি ভোটার এসেছেন। নির্বাচন করতে পেরেছি এটি বড় কথা।
এক প্রশ্নের উত্তরে রুবানা বলেন, স্বাচ্ছন্দ্যের কোনো অভাব দেখিনি। কোনো রকম স্বাচ্ছন্দহীনভাবে ভোট হয়েছে বলে মনে করি না।
আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল স্বাধীনতা পরিষদের প্রধান জাহাঙ্গীর আলমও বলেছেন, ভোট উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভোট হয়েছে এটি বড় কথা। ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন হচ্ছে যা আমরা চেয়েছিলাম। এজেন্ট না থাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর বলেন, কাউকে দায়ী করার কিছু নেই। ইলেকশন হয়েছে এটি বড় কথা।
এর আগে সকাল ৮টায় রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বিজিএমইএ ভবনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে তা চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
বিজিএমইএর পরিচালক পদের সংখ্যা ৩৫। সমসংখ্যক এই পদের বিপরীতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে চট্টগ্রামের শুধু একটি প্যানেলের প্রার্থী থাকায় ঢাকায় ২৬ পরিচালক পদের বিপরীতে দুই প্যানেলের ৪৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। স্বাধীনতা পরিষদ চট্টগ্রামে প্রার্থী না দেয়ায় সেখানে সম্মিলিত ফোরামের ৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ঢাকায় সম্মিলিত-ফোরাম থেকে বিজিএমইএর পরিচালক হয়েছেন রুবানা হক, এস এম মান্নান, ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ নাছির, আসিফ ইব্রাহিম, আরশাদ জামাল, এম এ রহিম, কে এম রফিকুল ইসলাম, মো. শহীদুল হক, মশিউল আজম, ইনামুল হক খান, মাসুদ কাদের, ইকবাল হামিদ কোরাইশী, নাছির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, রেজওয়ান সেলিম, মুনির হোসেন, এ কে এম বদিউল আলম, মিরান আলী, মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, মোশারফ হোসেন ঢালী, শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, মহিউদ্দিন রুবেল, শরীফ জহির ও নজরুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে এই প্যানেলের বিজয়ীরা হলেন মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, এ এম চৌধুরী, এ এম মাহবুব চৌধুরী, এনামুল আজিজ চৌধুরী, মোহাম্মদ আতিক, খন্দকার বেলায়েত হোসেন, অঞ্জন শেখর দাশ, মোহাম্মদ মুছা ও মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা।
অপরদিকে জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা পরিষদের কেউ জয়ী হয়নি।