বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে আবাসিক হলসমুহ খুলে দেয়া হয়েছে। তবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার সকাল ৯টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থান নিয়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসি ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগ কিংবা তার বাধ্যতামূলক ছুটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এর আগে শনিবার বরিশাল সার্কিট হাউজের সভা কক্ষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা সভার আয়োজন করে বিভাগীয় প্রশাসন। সেখানে শিক্ষার্থীদের ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সদর আসনের এমপি ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম, সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ, পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেন , জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমানসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ সদস্যের শিক্ষক প্রতিনিধি এবং ৩ সদস্যের সুশীল সমাজ নেতৃবৃন্দ সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অচালাবস্থা নিরসনে আলোচনা করেন।
সভা শেষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবির সঙ্গে তারা একমত পোষণ করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী এই উপাচার্যকে ছুটিতে পাঠানো কিংবা তাকে আর দায়িত্ব পালন করতে না দেয়ার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়কে অবহিত করবেন। একই সঙ্গে শনিবার বিকেলের মধ্যে সকল আবাসিক হল ও ডাইনিং খুলে দেয়া ছাড়াও রোববার সকল শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া আগামীতে বরিশালে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো সংকট মোকাবেলায় বরিশালের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সিন্ডিকেট কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সভায় সবাই ঐক্যমত পোষণ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভাগীয় প্রশাসনের সমঝোতা সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার বিকেল থেকে সকল আবাসিক হল এবং ডাইনিং চালু করা হয়েছে। রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন না। তাদেরকে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে অনুরোধ করছি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মো. আল-আমিন গণমাধ্যকে বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা তার বাধ্যতামূলক ছুটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না।
উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের না জানানোর কারণে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়া হলে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের। এরপরও শিক্ষার্থীরা টানা ১২ দিন আন্দোলনের পর শনিবার বরিশালের জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে।