মোবাইল ডাটা দ্রুত শেষ হয়ে যায় যেভাবে

ডেস্ক রিপোর্ট

মোবাইল ডাটা

আজকাল মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একটা কমন অভিযোগ হলো, ডাটা (ইন্টারনেট) দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। বেশি ভিডিও দেখছি না, গান শুনছি না, অনেক অ্যাপও ব্যবহার করছি না। তাও কীভাবে যেন মেয়াদের আগেই ফুরিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট প্যাকেজ বা ভলিউম। দেশের মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নিজের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন কীভাবে দ্রুত শেষ হয়ে যায় মোবাইল ডাটা। তিনি মোবাইল ইন্টারনেট নিয়েই কাজ করেন।

১. স্মার্টফোনে বেশি অ্যাপ ব্যবহার করলে অ্যাপস ইন্সটল হওয়ার সময় এবং পরে ডাটা ব্যবহার (ব্যাকগ্রাউন্ডে) হতে থাকে। ‘ব্যাটারি লো পাওয়ার মোডে’ থাকলে ডাটার ব্যবহার কম হয়। আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড ফোন অনেক সময় ‘ডাটা পুল’ করে থাকে। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট অ্যাপসগুলোর নির্মাতারা নিয়মিত অ্যাপসের আপডেট প্রকাশ করে অনলাইনে। আর অ্যাপগুলোও স্বয়ংক্রিয়ভাবে (যদিও আইফোনের অ্যাপস আপডেট চায়) আপডেট হয়ে যায়। ফলে এখানেও অনেক ডাটা চলে যায়।

২. থ্রিজি ও ফোরজি ব্যবহারের ডাটার ব্যবহার ভিন্ন হয়। ধরা যাক কেউ থ্রিজিতে ইউটিউবে কোনও ভিডিও দেখছেন। ইউটিউব তখন এক ধরনের রেজুলেশনের ভিডিও দেখাবে। যখনই ব্যবহারকারী ফোরজি নেটওয়ার্কে চলে যাবেন তখন ইউটিউব উচ্চ রেজুলেশনের ভিডিও নিজেই নিয়ে নেয়। তখন ডাটা বেশি খরচ হয়।

৩. মোবাইল ডাটায় গতিও একটা বড় বিষয়। থ্রিজির চেয়ে ফোরজির গতি স্বাভাবিকভাবেই বেশি। ফলে থ্রিজি বা ফোরজিতে ইউটিউবে কোনও ভিডিও দেখার পরে স্ক্রিনের নিচের দিকে ওই সম্পর্কিত আরও ভিডিও ইউটিউব রিকমেন্ড করে। তখন ওই ভিডিও দেখতে চাইল উচ্চ রেজুলেশনের সব ভিডিও দেখাতে শুরু করে। স্বাভাবিকভাবেই ফোরজি ডাটা থ্রিজির তুলনায় দ্রুত শেষ হয়।

৪. ফেসুবক ব্যবহারের সময় প্রায়ই ‘ভিডিও অটোপ্লে’ অপশন চলে আসে। দেখতে না চাইলেও ভিডিও চালু হয়ে যায়। এটা প্রচুর ডাটা নিয়ে নেয়। যারা বোঝেন বিষয়টি তারা তো বোঝেনই, আর যারা না বোঝেন তারা এই অটোপ্লে অপশনটা বন্ধ করে দিলে ডাটা সেভ করতে পারবেন। যেটা দেখতে চাইবেন সেই ভিডিওটা চালু করলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি কতটুকু খরচ করেছেন (আনুমানিক)।

৫. দেশে এখনও ফোরজি সমর্থিত ফোন সেটের ব্যবহার তেমন শুরু হয়নি। সংখ্যায় অনেক কম। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ফোরজি সমর্থিত স্মার্টফোন ব্যবহারে উৎসাহী করতে মোবাইল অপারেটরগুলো বিভিন্ন সময় নানা প্যাকেজ অফার করেন। ধরা যাক, একটি নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে কোনও অপারেটর অফার করলো ৩ জিবি+৭ জিবি ৭ দিনের মেয়াদ। এরমধ্যে ৩ জিবি হলো থ্রিজি আর ৭ জিবি হলো ফোরজি ডাটা। যদি ব্যবহারকারীর স্মার্টফোন থ্রিজি হয় তাহলে তিনি শুধু ৩ জিবিই ব্যবহার করতে পারবেন। ফোরজি স্মার্টফোন না হওয়ায় তিনি ৭ জিবি বোনাস ডাটা ব্যবহার করতে পারবেন না। ফলে দেখা যায়, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ২-৩ দিনের মধ্যে ৩ জিবি ডাটা শেষ করে ফেলেন। অথচ তিনি তো জানেন তার মোট ডাটা ১০ জিবি। তিনি ভাবেন, এত দ্রুত শেষ হলো কীভাবে। এই বিষয়টি ভালোভাবে মোবাইল ব্যবহারকারীরা না বোঝার কারণে বেশিরভাগ সময়ে জটিলতা তৈরি হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এর বাইরে যদি কারও মোবাইল ডাটা দ্রুত শেষ হয়ে যায় তাহলে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযাগ করতে হবে। কারিগরি ত্রুটির কারণেও এমনটা হতে পারে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে