ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কংগ্রেসের পর এবার দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রতিশ্রুতিতে ঠাসা এক নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে। ভোটগ্রহণ শুরুর মাত্র তিনদিন আগে আজ সোমবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে দলটির প্রধান কার্যালয়ে এই ইশতেহার প্রকাশ করা হয়।
বিজেপির নির্বাচনী এই ইশতেহারের নাম দেয়া হয়েছে ‘সংকল্প পত্র।’ এর আগে রোববার দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা অরুণ জেটলি জানিয়েছিলেন, এবার দলের স্লোগান ‘ফির একবার, মোদি সরকার!’
সোমবার ইশতেহার প্রকাশের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, আমরা দেশকে পুরো সুরক্ষিত করার কাজ করছি। অথচ বিরোধীরা তার বিদেশ সফর নিয়ে কটাক্ষ করেন। সারা দেশের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। সৌদি আরব প্রধানমন্ত্রীকে সে দেশের সবচেয়ে বড় সম্মান দিয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিল ‘জন ধন যোজনা।’
অরুণ জেটলি বলেন, প্রচারের প্রথম ভাবনা থাকবে কাম করনেওয়ালি সরকার। দুর্নীতিগ্রস্ত পর্ব কাটিয়ে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসে বিজেপি সততার সঙ্গে সরকার পরিচালনা করেছে। এ ক্ষেত্রে এবারের ‘ইমানদার সরকার’ হবে দ্বিতীয় ভাবনা।
প্রতিবেশি দেশগুলো থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে ইশতেহারে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন,ভারতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে। মুসলিম নারীদের জন্য আমরা ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করব। প্রতিটি মানুষের বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে এটিএম বুথ থাকবে। সব শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করা হবে।
‘কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ১০০ জনে একজন চিকিৎসক তৈরির চেষ্টা চলবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেয়া হবে। ৭৫টি মেডিক্যাল ও স্নাতকোত্তর মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি হবে। স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তি মাথায় রেখে ৭৫টি প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বিজেপির ইশতেহারে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার ৫০টি বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমাদের সরকার দেশে সংস্কার এনেছে।
তিনি বলেন, আমরা এই সংকল্প পত্র তৈরির আগে দেশের ছয় কোটি মানুষের মতামত নিয়েছি। ২০১৪ সালের ক্ষমতায় আসার পর আমাদের দেশের অবস্থান ছিল বিশ্বের ১১ তম অর্থনীতির দেশ। আজ এই অবস্থান পাঁচে।
ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেন, ‘ফির একবার মোদি সরকার’ এই স্লোগান সারা দেশে পৌঁছাতে হবে। এবারও আপনারা ভোট দিন, আমরা একটা মজবুত সরকার গঠন করব। যে আশা নিয়ে ভোট দিয়েছিলেন, তা পূরণ হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে আপনারা মোদিকে ভোট দিয়েছিলেন। এবারের লোকসভা নির্বাচন সাধারণ মানুষের অপেক্ষার নির্বাচন। দেশের সুরক্ষার জন্য মোদি সরকার সব রকম কাজ করেছে। দেশের জনগণ মোদি সরকারের উপর আস্থা রেখেছে। ইউপিএ জমানায় যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছিল, তা মুক্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে ভারত মহাশক্তি হিসেবে উঠে এসেছে।
সূত্র : জিনিউজ, আনন্দবাজার, এনডিটিভি।