দীর্ঘ দুই বছরের গবেষণায় সকল পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে পাঙ্গাস মাছের আচার ও পাউডার তৈরি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্য প্রযুক্তিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম ও তার গবেষক দল।
মৎস্য প্রযুক্তিবিদ্যা বিভাগের সভা কক্ষে সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পাঙ্গাসের আচার সম্পর্কে অধ্যাপক নওশাদ বলেন, সাধারণ রান্নার যন্ত্রপাতি ও তৈজসপত্র দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রেখে যে কেউ মচমচে পাঙ্গাস আচার তৈরি করতে পারবেন। আচারটিতে শতকরা ৩৭ ভাগ আমিষ, ২৮ ভাগ স্নেহ, ১৬ ভাগ মিনারেল ও ১১ ভাগ ফাইবার পাওয়া গেছে। এটি শুকনো ও মচমচে হওয়ায় প্রায় এক বছর কক্ষ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে। এক কেজি পাঙ্গাস থেকে ৩৫০ গ্রাম আচার তৈরি করা যায়।
পাঙ্গাসের পাউডার বিষয়ে তিনি বলেন, পাঙ্গাস মাছের চর্বি কক্ষ তাপমাত্রায় নষ্ট হয়ে যায়। এর চর্বি ও আমিষকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ উপযোগী করে পাউডার তৈরি করা হয়েছে। এক কেজি পাঙ্গাস থেকে প্রায় ২৫০ গ্রাম পাউডার তৈরি করা সম্ভব। এটিও এক বছরের মতো সংরক্ষণ করা যাবে। পাঙ্গাসের পাউডার দিয়ে আচার, ভর্তা, স্যুপ, নুডলস, তরকারি খিচুরি ইত্যাদি বানানো যাবে। এছাড়াও পাউডার দুধ বা নবজাতকের খাবার, বেকারি পণ্য, বিস্কুট, চিপস্ বা অন্যান্য যেকোন খাদ্য দ্রব্যে মিশিয়ে পুষ্টিগুণ বাড়ানো যাবে। মাত্র ১.৫০ টাকা মূল্যের ৩ গ্রাম পাউডার দিয়ে এক জনের খাওয়ার উপযোগী ২৫০ মিলি স্যুপ বা ৮০ গ্রাম ওজনের ১ বাটি নুডলস তৈরি করা সম্ভব। এর পাউডারে ৪৫ ভাগ আমিষ, ৩২ ভাগ চর্বি, ১ ভাগ মিনারেল ও ৯ ভাগ ফাইবার পাওয়া গেছে।
মাছের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পাঙ্গাস চাষে লোকসান ঠেকাতে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ‘মিঠা পানির মাছের আহরণোত্তর ক্ষতি প্রশমন ও মূল্য সংযোজন’ প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।