গ্রাম আদালত মামলার জট কমাচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি

গ্রাম আদালতের ফাইল ছবি
গ্রাম আদালতের ফাইল ছবি

২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের এক হাজার ৮০টি ইউনিয়নে ৯১ হাজার ৯৫০টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭১ হাজার ২০৫টি মামলার রায় প্রদান হয়েছে এবং ৬৫ হাজার ৮২৯টি মামলার সিদ্ধান্ত (রায়) বাস্তবায়ন হয়েছে।

গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (দ্বিতীয় পর্যায়) ‘প্রকল্প পর্যালোচনা কর্মশালায়’ প্রকল্প পরিচালক ড. কাজী আনোয়ারুল হক এমন তথ্য জানান।

universel cardiac hospital

আজ বুধবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।


নথিভুক্ত মামলার ২৮ ভাগেরও বেশি আবেদনকারী নারী

এ প্রকল্পের কর্ম-এলাকার নথিভুক্ত মামলার ২৮ ভাগেরও বেশি আবেদনকারী হচ্ছেন নারী। কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, গ্রাম আদালত স্থানীয় পর্যায়ে শান্তি ও সুশাসন বজায় রাখা এবং উচ্চ আদালতে মামলার জট কমাতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখছে।

তিনি বলেন, সরকারের গ্রামোন্নয়ন পরিকল্পনায়ও এ আদালতের সেবার মানোন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা হচ্ছে। তাই গ্রাম আদালতের সেবা যাতে সারাদেশে আরও কার্যকরভাবে সম্প্রসারণ হয় সেজন্য মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গভর্নেন্স ডেলিগেশন টু বাংলাদেশের টিম লিডার অড্রে মেলট বলেন, বিচারপ্রাপ্তির অধিকার সামাজিক শান্তি বজায় রাখা ও সুশাসনের জন্য অনিবার্য, যা গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।

এ আদালতের বিচারক প্যানেলে নারীর উপস্থিতি এবং বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীদের সহজ প্রবেশাধিকার নারী ও শিশুর বিচারপ্রাপ্তির সুযোগকে আরও প্রসারিত করছে।

এ প্রকল্পের কর্মকাণ্ড পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় সম্প্রসারণ হতে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ইউএনডিপির ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, উচ্চ আদালতে ৩.৩ মিলিয়নের বেশি মামলার জট রয়েছে। এ মামলার জট যাতে আর বাড়তে না পারে সেজন্য গ্রাম আদালত কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এ আদালতকে আরও সক্রিয়ের লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সার্বিক সহযোগিতার প্রশংসা করেন তিনি।

কর্মশালায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক বলেন, স্থানীয়পর্যায়ে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও স্বল্প সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা গেলে বিচারযোগ্য অনেক মামলাই জেলা আদালতে যাবে না। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রশাসনকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন প্রকল্পের পরিচালক ড. কাজী আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পভুক্ত এক হাজার ৮০টি ইউনিয়নে ৯১ হাজার ৯৫০টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭১ হাজার ২০৫টি মামলার রায় প্রদান হয়েছে এবং ৬৫ হাজার ৮২৯টি মামলার সিদ্ধান্ত (রায়) বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রকল্পের সমন্বয়ক সরদার এম আসাদুজ্জামান জানান, এ প্রকল্পের কর্ম-এলাকার নথিভুক্ত মামলার শতকরা ২৮ ভাগেরও বেশির আবেদনকারী হচ্ছেন নারীরা।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে এ প্রকল্প। কর্মশালায় প্রকল্প এলাকার মাঠপর্যায়ে কর্মরত ২৪ উপ-পরিচালক, ইউনিয়ন পরিষদের ১০ চেয়ারম্যানসহ মাঠপর্যায়ের প্রায় ১৫০ কর্মকর্তা অংশ নেন।

তারা মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করেন এবং বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন। গ্রাম আদালতগুলো আরও কার্যকরের জন্য তাদের সুপারিশগুলো ধরে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের দিকনির্দেশনা ঠিক করা হবে বলেও কর্মশালা থেকে জানানো হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে