পঞ্চম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্র হত্যায় দুজনের যাবজ্জীবন

ডেস্ক রিপোর্ট

আদালত
ফাইল ছবি

জয়পুরহাট সদর উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যার দায়ে দুই মাদ্রাসাছাত্রের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম মাহমুদুল হক এই রায় দেন। ২০০৭ সালের ২ নভেম্বর হত্যার ওই ঘটনা ঘটে।

দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার আরজী জগদীশপুর গ্রামের নুরে আলম ও নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার খোজাগাড়ি গ্রামের মাহবুব আলম। পাশাপাশি তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম নুরন্নবী। সে ও দণ্ডিত দুজন উপজেলার চকবরকত দ্বীনে মারকাজ এতিমখানার ছাত্রাবাসে থেকে পাশের আলিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন। দণ্ডিত দুজন হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সময় নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। নিহত নুরন্নবী উপজেলার ধলাহার গ্রামের আয়েজ উদ্দীনের ছেলে।

পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর নুরে আলম ও মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালতে ২১ জন সাক্ষ্য দেন।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, নুরে আলম ও মাহবুব আলম ২০০৭ সালের ২ নভেম্বর গভীর রাতে প্রস্রাব করতে যাওয়ার কথা বলে ওই ছাত্রকে ছাত্রাবাসের বাইরে নিয়ে হাত পা বেঁধে শ্বাসরোধ ও গলা কেটে হত্যা করেন। পরে তাঁরা মাদ্রাসার পেছনের একটি কবরস্থানে মরদেহটি ফেলে রাখেন। ৩ নভেম্বর পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে। একই দিন ছেলের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আয়েজ উদ্দীন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

জয়পুরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি ফিরোজা চৌধুরী জানিয়েছেন, দণ্ডিতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাঁরা ওই কিশোরকে বলাৎকার করতেন। বিষয়টি নুরন্নবী কয়েকজনকে বলে দেওয়ায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। ফিরোজা চৌধুরী আরও বলেন, অপরাধের সময় আসামিরা কিশোর ছিলেন। এখন যুবক। রায় শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর নুরে আলম ও মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালতে ২১ জন সাক্ষ্য দেন।

আসামিদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আদালত ২১ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণ শেষে এই রায় দিয়েছেন। আসামিদের পরিবারের পক্ষ থেকে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে