ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের গাফিলতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, তদন্ত চলাকালীন সময়ে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তে তার অবহেলার প্রমাণ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়াও আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ও রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন উপস্থিত ছিলেন।
সোনাগাজী থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন দ্রুত পদক্ষেপ নিলে এমন নির্মম ঘটনা ঘটতো না বলে অভিযোগ উঠছে, এ বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নজরে আনেন সাংবাদিকরা।
এসময় মন্ত্রী বলেন, ফেনীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলাটিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে দেয়া হয়েছে। দ্রুত তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্রুত চার্জশিট দেয়া হবে।
টানা পাঁচদিন প্রায় ১০৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বুধবার রাতে মৃত্যুর কাছে হার মানেন নুসরাত জাহান রাফি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন নুসরাতকে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
শারীরিক অবস্থার একটু উন্নতি হলেই নুসরাতকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার পরিকল্পনা করছিলেন চিকিৎসকরা। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্রও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল বুধবারই। তবে সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায় চিকিৎসকদের। ফেরানো যায়নি তাকে।
গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে ৪/৫ জন বোরকা পরা ব্যক্তি ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়।
পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।