নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বিভিন্ন হাওরের বোরো ফসলে ধানের ভেতর চাল নেই। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে কোল্ড ইনজুরির ও নেক ব্লাস্ট রোগের কারণে এমনটা হয়েছে।
কলমাকান্দায় বোরো ফসলের আবাদ যখন শেষ করে কৃষক ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষেতের ধান যখন পেকে আসছে তখনি কৃষকের জন্য দুঃসংবাদ সামনে চলে এসেছে। ধানে চাল নেই, ধানে চিটা। আবারও নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে হবে উপজেলার হাওরাঞ্চলের কৃষকসহ হাজারও কৃষি পরিবারকে।
বড়খাপন গ্রামের কৃষক দয়াল সামছু জানান, এখনও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে, আশায় ছিলাম ফসল উঠলে ঋণমুক্ত হতে পারব। ধানে চিটার ফলে নতুন করে আবারও সমস্যায় পড়তে হলো।
শুক্রবার সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলায় সবচেয়ে বড় হাওড় গোড়াডোবা , সোনাডুবি, মেদিকান্দাসহ প্রায়ই ১ হাজার হেক্টর বোরো ফসলে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হাওরপাড়ের কৃষকদের অভিযোগ অজ্ঞাত রোগ সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ে প্রতিরোধ ও সচেতনা বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষি বিভাগ কর্তৃক কোন ধরণের মাইকিং বা কৃষকদের কে নিয়ে কাউন্সিলিং দৃশ্যমান হয়নি। যার ফলে দিশেহারা কৃষক।
বড়খাপন ইউপি’র চেয়ারম্যান একেএম হাদিছুজ্জামান হাদিছ প্রতিনিধিকে বলেন
গেল বছরে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আগেই আবারও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে এসেছে হাওড়ের কৃষকদের জীবনে।
তিনি সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে আরোও বলেন যাতে করে আমাদের দেশের হাওরাঞ্চলের কৃষকরা বন্যার আগে ফসল কেটে নিয়ে যেন গোলায় উঠাতে পারে সে ধরনের বীজ উদ্ভাবন করে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফারুক আহম্মেদ জানান, উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে। ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ে ছিল ২১ হাজার ৩০ মেট্রিক টন। কিন্তু কোল্ড ইনজুরির ও নেক ব্লাস্ট রোগের কারণে কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনেক নিচে নেমে আসবে।
তিনি আরোও বলেন আবাদের একাংশে মাঘ মাসের প্রচন্ত শীতে যখন তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রীতে নেমে আসে, তখন যেসব বোরো ফসলের ধান গাছের পেটে থোড় ছিল, ঠান্ডাজনিত আবাওয়ায় সেগুলোর চাল ধারণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে। আবার কিছু কিছু এলাকায় নেক ব্লাস্ট রোগে দেখা দেওয়ায় চাল ধারণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে। তবে আমরা নেক ব্লাস্ট রোগের করণীয় সর্ম্পকে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ সেবা প্রদান করে যাচ্ছি।
এ বছর কৃষক বন্যা আতঙ্কে বীজ রোপণের সময় হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে ক্ষেতে ধান বীজ রোপণ করায় ধান গাছগুলো প্রচন্ত ঠান্ডার সময় থোড় হওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে আগে তা বুঝা যায়নি, এখন ফসল পাকার সময় ধরা পড়েছে অধিকাংশ ধানে চাল নেই চিটা।