বাংলা নববর্ষে রাঙালো কোরিয়ার সিটি হল

ডেস্ক রিপোর্ট

লাল সবুজের চিরায়িত বাংলার হাজার বছরের সার্বজনীন  মিলন উৎসব পহেলা বৈশাখ। পুরনোকে ভুলে, জীর্ণতাকে মুছে ফেলে উৎসবে-আনন্দ-আহ্লাদে মাতোয়ারা হওয়ার দিন। ১৪২৫ কে  বিদায়,  ১৪২৬ সালকে বরণ করতে উৎফুল্লচিত্তে বাঙালির প্রাণের এই উৎসবকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী বাঙালি জাতিসত্তার বর্ণিল পরিচিতি। 

সমকালীন সময়ে দেশের গন্ডি পেরিয়ে, বৈশাখের রূপ প্রবাসের মাঠিতে সর্বজনীনতায় ছুঁয়েছে। বাংলা নববর্ষ, বাঙালি ও বৈশাখী মেলা একই সূত্রে প্রাণোচ্ছল বর্ণিল আবহে বিনিসূতোয় গাঁথা। বাঙালি তার নিজস্ব জাতিসত্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যতগুলো উৎসব পালন করে এর মধ্য বাংলা নববর্ষ সর্বাগ্রে। বৈশাখ বরণের সঙ্গে যে অনুষ্ঠানটি ওঁতপোতভাবে জড়িত, তা হলো আমাদের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা।

universel cardiac hospital


এই মেলা শুধু ঢাকার রমনা নয়, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, শহর থেকে উপশহরে, পুরো বিশ্বময়। যেখানে বাংলা ভাষাভাষী মানুষ সেখানেই বৈখাখ।এরই পরিক্রমায়  আজ দক্ষিণ কোরিয়া  সিউলের সিটি হলে বাংলাদেশ দূতাবাসের  আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পরিণত হলো প্রাণের উৎসবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে  ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানটি সূর যন্ত্রীতে তোলেন রাষ্ট্রদূত নিজেই।

কোরিয়ায় হাজার  হাজার বাংলাদেশিদের বসবাস। প্রবাসী বাংলাদেশি, কোরিয়ান নাগরিক,  বিদেশি নাগরিক,  বিভিন্ন  দেশের কূটনীতিক, সিউলস্থ বিভিন্ন  দেশের  কূটনৈতিক কোরের  ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশি নানান সামাজিক  সংগঠনের নেতৃবৃন্দ  ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। 

দূতাবাসের  উদ্যোগে বৃহৎ পরিমন্ডলে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয় সিউল সিটি হলের অষ্টম তলায়। কোরিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিরা বর্ণিল রঙে-ঢঙে সেজেছেন, মেতেছেন  ভিন্ন আমেজে। আহ্লাদিত মনে প্রবাসীরা ১৪২৬ বাংলা বর্ষকে বরণ করেন।

বেলা সাড়ে ১১ টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।  সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের এই আয়োজনে   শিকড়সন্ধানী প্রবাসী বাঙালিরা দেশের সুরে মেতেছেন, নেচেছেন। কোরিয়ার বুকে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ যেন একখণ্ড বাংলাদেশ।

আজ ১৪ এপ্রিল রবিবার কোরিয়ায়  সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় অনুষ্ঠান স্থলে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। 

উল্লেখ্য, দর্শকদেরকে আনন্দ দিতে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন  শিল্পকলা একাডেমির একঝাঁক তারকা শিল্পী। শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের গান, নাচ আগত দর্শকরা আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেন।

বিদেশের মাটিতে ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে অনুষ্ঠানে আসা মানুষগুলো বন্ধু বান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডা-খুনসুঁটিতে মেতে উঠেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিদেরকে  ইলিশ, পান্তা ভাত, আলু ভর্তা, বেগুনভর্তা দিয়ে.. আপ্যায়ন  করানো হয়। আগত দর্শনার্থীরা রসনাবিলাসি বাংলাদেশি খাবারের পাশাপাশি উপভোগ করেন মনমাতানো, প্রাণজুড়ানো, বর্ণিল, প্রাণবন্ত দেশীয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে