অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের কথোপকথনের ভিডিও ধারণ ও তা প্রকাশ করায় সোনাগাজী মডেল থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন। আজই এ মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান এ আইনজীবী।
নুসরাত থানায় যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করতে গেলে ওসি সেটা ভিডিও করে রাখেন এবং নিপীড়নের ঘটনাকে ‘নাটক’ ও পরবর্তীতে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাকে ‘আত্মহত্যার’ রূপ দিতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
দুটি ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ তার সহযোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ধরনের আরো অভিযোগে ১০ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানা থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে নুসরাত জাহান রাফি অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। ঘটনার পর থেকে প্রকাশ্যে না বললেও আকারে-ইঙ্গিতে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছেন ওসি।
৯ এপ্রিল এ ঘটনা তদন্তে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইডি খন্দকার গোলাম ফারুক সোনাগাজীর ওই মাদ্রাসায় গেলে ওসির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ডিআইজি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাব না দিলেও ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন উত্তেজিত হন। পরদিন দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।
নুসরাতের এ ভিডিও প্রকাশের পর থেকে ওসিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন নারী নেত্রী, মানবাধিকার কর্মী ও স্থানীয়রা।
টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।