বাবা হত্যার প্রতিশোধ নিতেই নরসিংদীর রায়পুরায় বাইরে থেকে তালা মেরে ঘরের ভেতরে আগুন লাগিয়ে একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা।
দগ্ধদের মধ্যে রয়েছে একই পরিবারের তিন বোন। তারা হলো উপজেলার লোচনপুর গ্রামের সামসুল মিয়ার মেয়ে ও বিপ্লবের ছোট বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী মুক্তামণি (১৬), অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সুইটি আক্তার (১৩), ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী প্রীতি আক্তার (১১)। দগ্ধ অন্যজন তাদের ফুফু খাতুন্নেছা (৬০)।
তাদের মধ্যে গুরুতর সুইটি আক্তারের অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছে স্বজনেরা। তাকে শনিবার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে ‘এইচডিইউ’তে (হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়েছে।
বাকি তিনজনের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তাদেরও হাসপাতালের এইচডিইউতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, রোগীদের শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। আহতরা বেশির ভাগই শিশু হওয়ায় চিকিৎসার ক্ষেত্রেও কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। তারা এখনও শঙ্কামুক্ত নন।
এই মামলায় এ পর্যন্ত রবিন ও মামুন নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জমি দখল ও রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাদের পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে স্থানীয় শিপন মিয়া ও তার সমর্থকরা। এর আগেও তারা একাধিকবার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। দীর্ঘদিন বাড়িছাড়া থাকার পর থানা পুলিশের আশ্বাসে ফিরে এসে বর্বর হামলার শিকার হয়েছেন তারা।
নরসিংদী পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
জানতে চাইলে আহতদের স্বজন রত্না আক্তার বলেন, আমরা গরিব মানুষ। এ হামলার পর থেকে অনেক টাকা এরই মধ্যে খরচ হয়েছে। এতকিছুর পরও বাড়ি ফিরতে পারব কি না, নিশ্চয়তা নেই।
তিনি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, এলাকায় যেতে হলে পুলিশের সহযোগিতা প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোরে নরসিংদীর রায়পুরায় সুইটিদের পুড়িয়ে মারতে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।