১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসায় ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির স্বাক্ষরিত হওয়ার পর তিন পার্বত্য জেলায় চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নে ২ হাজার ২১৮টি স্কিম বাস্তবায়ন হচ্ছে। এসব স্কিমের আওতায় ৩ পার্বত্য জেলায় (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) নির্মাণ করা হচ্ছে ছোট ছোট অবকাঠামো।
এসব স্কিমের আওতায় পার্বত্য অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মানুষের জীবন মান উন্নয়ন করা হবে।
সূত্র মতে, এ ছাড়াও স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বনায়ন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সম্প্রসারণ, মৎস্য চাষ ও পশুসম্পদের উন্নয়ন, ফলমূল ও রাবার বাগান সৃজন, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা সম্প্রসারণ, পানীয় জল সরবরাহ, পর্যটন সুবিধার উন্নয়ন এবং ইক্ষু ও তুলা চাষ সম্প্রসারণ সংক্রান্ত স্কিমও রয়েছে।
এসব স্কিম সচল রাখতে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দাবি করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং।
গত ২৭ মার্চ সংশোধিত এডিপির আওতায় ৭০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দসহ মোট ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের কাছে ডিও লেটার পাঠিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। যাচাই-বাছাই চলছে।
চিঠিতে বীর বাহাদুর উ শৈ সিং বলেছেন, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য ৩ জেলা ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসন আমল থেকেই উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল। দুই দশকের বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে পার্বত্য অঞ্চল উন্নয়নের মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্ছন্ন ছিল।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির স্বাক্ষরিত হওয়ার পর তিন পার্বত্য জেলায় চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ৯৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। তার মধ্যে এডিপিভুক্ত ১৯টি প্রকল্পের জন্য ৫৫৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, তিনটি উন্নয়ন সহায়তা খাতে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ অর্থে ওই সব স্কিম বাস্তবায়ন হচ্ছে।
চিঠিতে বীর বাহাদুর উ শৈ সিং উল্লেখ করেন, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে উন্নয়ন সহায়তা খাতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪৩০ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে চাহিদার তুলনায় ৭০ কোটি টাকা কম দেয়া হয়েছে। কিন্তু যে সব স্কিম চলমান রয়েছে সেগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তাই বাকি ৭০ কোটি টাকাসহ মোট ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া সমীচীন হবে।
জানা যায়, এ চিঠি পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই বরাদ্দ বাড়িয়ে দেয়ার সুপারিশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। গত ১০ এপ্রিল সংক্রান্ত চিঠিটি পরিকল্পনামন্ত্রীর দফতর থেকে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্র জানায়, গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোর অনুকূলে ব্যয় হয়েছে ৩২৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ১৪ শতাংশ।