ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির আয়োজনে শহরের স্থানীয় ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্তরে সপ্তাহব্যাপী ৩৩ তম বৈশাখি উৎসব ও মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।
রোববার রাত আটটার দিকে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন।
এসময় ঊষা নৃত্যালয়ের সঙ্গীতশিল্পীরা বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করেন। পরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, আমাদের স্বাধীনতা দুটি কারণে সমৃদ্ধ হয়েছে। তা হলো বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান প্রতিটি বাঙালির জীবনের অংশ। এটি অসম্প্রদায়িক উৎসব। মানুষের সৃজনশীলতা ও স্বাধীনতার বহি:প্রকাশ।
তিনি বলেন, যারা পহেলা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রা বিরোধীতা করে, তারা ১৭ কোটি বাঙালির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর স্পর্ধা দেখায় সত্যিই দুখ:জনক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ সারা দেশের মানুষ আজ বাঙালির প্রাণের উৎসবে মেতে উঠেছে। উৎসবের কোনো ধর্ম নেই। আমাদের দেশ, আমাদের স্বাধীনতা আমাদের গর্ব।
সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী উৎসব উদযাপন পরিষদ-এর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, একটি নির্দিষ্ট বার যেমন, ’রোববার’ কোনো নির্দিষ্ট ধর্মবর্ণ গোষ্ঠীর কারো নয়- তেমনি পহেলা বৈশাখের একটি বিশেষ দিনে মিষ্টিমুখ করানোর মাধ্যমে আমরা একে অপরের প্রতি সৌহার্দ সম্প্রতি বিনিময় করি। সকলেই মিলেই উৎসব উদযাপন করি। এগুলো কোনো ধর্মীয় অনুভূতি নয়। কেবল মাত্র রেওয়াজ। যারা রেওয়াজের উপর ধর্মীয় প্রভাব ফেলতে চায় তারা হলো সাম্প্রদায়িক শক্তি। যারা উৎসবে ধর্মের কথা বলতে চায় তারা জাতিকে বিভক্তি করতে চায়। ধর্ম হলো যার যার, উৎসব সবার।
তিনি আরো বলেন, যারা আমাদের ঐতিহ্যের মধ্যে বিভাজন করতে চায় তারা দেশের শক্রু। তাদের বিরুদ্ধে ৭১-এর মতো আবারো রুখে দাঁড়াবার জন্য আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন সহকারী পুলিশ সুপার(হেড কোয়াটার্স) আবু সাঈদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মো. আবু সাঈদ, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পী, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এম আর ওসমান গণি সজিব। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম শিবলী। সপ্তাহব্যাপী বৈশাখি মেলায় অন্তত ২৫টি ষ্টল অংশগ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে।