নিরাপত্তাহীনতার জন্য ২০১৮ সালে ভারত ছেড়েছেন ৫ হাজার বিত্তশালী

ডেস্ক রিপোর্ট

২০১৮ সালে ভারত ছেড়েছেন ৫ হাজার বিত্তশালী
নিরাপত্তাহীনতার জন্য গত বছর ভারত ছেড়েছেন ৫ হাজার বিত্তশালী। প্রতীকী ছবি

সারা বিশ্বে এই ধরনের বিত্তশালীদের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। তার মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যাই হলো তিন লক্ষ ২৭ হাজার।

ভারতীয় বিত্তশালীরা দেশ ছেড়ে দলে দলে বিদেশের মাটিতে পা রাখছেন। শুধু ২০১৮ সালেই ভারত ছেড়েছেন অন্তত ৫ হাজার জন ভারতীয় ধনকুবের।

গোটা বিশ্বে দেশত্যাগী ধনকুবেরদের তালিকায় এখন চীন আর রাশিয়ার পরেই ভারত। অ্যাফ্রো এশিয়া ব্যাঙ্ক এবং নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েল্‌থ-এর যৌথ উদ্যোগে ‘গ্লোবাল ওয়েল্‌থ মাইগ্রেশন রিভিউ রিপোর্ট ২০১৯’ নামের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। সেখানেই মিলছে দলে দলে ভারতীয় ধনকুবেরদের দেশ ছাড়ার তথ্য।

universel cardiac hospital

বিত্তশালী বলতে এখানে বলা হয়েছে ধনীদের কথাই। অর্থনীতির ভাষায় তার নাম ‘এইচএনডাব্লিউআই বা হাই নেটওয়ার্দ ইন্ডিভিজুয়াল’। যাঁদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ এক মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ৭ কোটি টাকা, তাঁদেরকেই রাখা হয়েছে বিত্তশালী বা ধনকুবেরদের তালিকায়।

সারা বিশ্বে এই ধরনের বিত্তশালীদের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। তার মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যাই হলো তিন লক্ষ ২৭ হাজার। বিত্তশালীদের সংখ্যার নিরিখে এখন নয় নম্বরে আছে ভারত।

ভারতে বিত্তশালীদের সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে দেশত্যাগী ধনকুবেরদের সংখ্যাও।  সদ্যপ্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ২০১৮ সালেই দেশ ছেড়েছেন অন্তত ৫,০০০ জন ভারতীয় ধনকুবের। দেশ ছাড়া ধনকুবেরদের তালিকায় এখন চীন আর রাশিয়ার পরেই ভারত।

যে কারণে ভারতীয় বিত্তশালীরা দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে পা রাখছেন, তার প্রধান কারণই হলো নিরাপত্তা। নিরাপত্তাহীনতার জন্যই তাঁরা দেশে থাকা আর ঠিক বলে মনে করছেন না, এমনটাই বলা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

এই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাখা হয়েছে— মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা, জলবায়ু, পরিবেশ, সন্তানের শিক্ষার পরিকাঠামো, কাজের পরিবেশ, আর্থিক দুশ্চিন্তা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, জীবনযাত্রার মান  এবং ধর্মীয় উত্তেজনা।

২০২৮ সালের মধ্যেই জার্মানি এবং ব্রিটেনকে টপকে পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার দৌড়ে এখন ভারত।

আগামী ১০ বছরের মধ্যে ভারতের জাতীয় উৎপাদন ৮,১৪৮ বিলিয়ন ডলার (৫ কোটি ৬৭ লক্ষ কোটি টাকা) থেকে বেড়ে ২২,৮১৪ বিলিয়ন ডলার (১৫ কোটি ৮৮ লক্ষ কোটি টাকা) হবে, এমনটাই লক্ষ্যমাত্রা ভারতের। গত এক বছরে মোট উৎপাদন কমলেও এই মুহূর্তে পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত।

ভারতের মোট উৎপাদন বাড়তে থাকলেও একই সঙ্গে বাড়ছে ধনী-দরিদ্র বৈষম্য। অর্থাৎ বিত্তশালীদের সংখ্যা বাড়লেও আরও গরিব হচ্ছেন অর্থনীতির নিচের তলায় থাকা মানুষজন। সদ্যপ্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ৪৮ শতাংশ সম্পত্তিই সাড়ে তিন লক্ষ মানুষের হাতে।

বাকি ৫২ শতাংশ সম্পত্তি আছে প্রায় ১৩০ কোটি মানুষের হাতে। তাই বিত্তশালীরা দেশ ছাড়লে  সেই সম্পত্তিও দেশ ছাড়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

দেশের অর্থনীতি ও সমাজকেনিরাপদ করার মাধ্যমেইবিত্তশালীদের দেশ ছাড়ার সংখ্যা কমানো যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাপত্রটিতে।

যদিও ভারতীয় অর্থনীতির জন্য আশার কথাও আছে এই রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতে এখনও যত ধনকুবের দেশ ছাড়ছেন, তার থেকে বেশি সংখ্যায় ধনকুবের তৈরিও করছে এই দেশ। তাই স্থায়িত্ব এবং নিরাপত্তা ফিরলে ফের দেশে থেকেই সম্পদের পরিমাণ বাড়াতে পারবেন তাঁরা।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে