সুবীর নন্দীর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে। তবে হৃদযন্ত্রের অবস্থা ভালো নয়, অস্ত্রোপচারের জন্য বিদেশে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গত রোববার রাত ৮টার দিকে তাকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। এর আগে তিনি সিলেট থেকে ফেরার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিকট অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখান থেকে সরাসরি সিএমএইচে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৭২ ঘণ্টার পরে শারীরিক অবস্থা জানা যাবে বলে চিকিৎসকেরা জানান।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্বে ৭২ ঘণ্টা শেষ হয় জানিয়ে সুবীর নন্দীর আত্মীয় তৃপ্তি কর বলেন, আজ সকালের পরে সুবীর নন্দীর লাইফ সাপোর্টে খুলে ট্রায়াল দেয়া হয়। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে হৃদযন্ত্র দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন বিদেশে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়ার মতো সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।
লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রায়াল দেয়া হয়েছে তবে এখনই লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলতে চাইছেন না, বেটারমেন্টের জন্য চিকিৎসকেরা আরো দুইয়েকদিন লাইফ সাপোর্টে রাখতে চান। এর আগেও সুবীর নন্দীর হার্টে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। এখন কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে এই বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। সুবীর নন্দীর চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে সার্বক্ষণিক একজন কর্নেল ও একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদ মর্যাদার চিকিৎসক রয়েছেন বলেও তিনি জানান।
জানা গেছে, সিএমএইচের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার তৌফিকের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার শ্রীমঙ্গলে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সুবীর নন্দী ও তার পরিবার। গতকাল পয়লা বৈশাখে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা ফেরার পথে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে সুবীর নন্দীর। এরপরই তাকে সেখান থেকে সরাসরি সিএমএইচে নেয়া হয়।
দেশের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর ১৯৮১ সালে প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশ হয়। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছরের সংগীত ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চারবার। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছর তিনি পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক।
সুবীর নন্দীর গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো ‘ও আমার উড়াল পঙ্খী রে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন’, ‘বধূ তোমার আমার এই যে পিরিতি’ ইত্যাদি।