পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। এই চাঁদ নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। বিজ্ঞানীরাও লেগে রয়েছেন এই উপগ্রহটির সুলুকসন্ধানের কাজে। এরইমধ্যে চমকে দেওয়ার মতো খবর চাঁদের বুক চিরে বেরিয়েছে পানি।
ঘটনাটা হলো চাঁদের বুকে আচমকা আছড়ে পড়ল একটি উল্কা। আর তাতে চাঁদের মাটি চিরে ফোয়ারার মতো বেরিয়ে এলো পানির কণা। এরপর মহাকাশে বাষ্প হয়ে উধাও হয়ে গেল সেই পানি। হারিয়ে গেল মহাকাশের অতল রহস্যের আঁধারে।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার-জিওসায়েন্সে’-এ আবিষ্কারের গবেষণাপত্রটি বের হয়েছে। গবেষক দলের প্রধান হিসেবে রয়েছেন মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেল্টে নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী মেহেদী বেন্না।
চমকে দেওয়ার মতো এ ঘটনার সাক্ষী হয়েছে নাসার পাঠানো উপগ্রহ ‘ল্যাডি’। যার পুরো নাম- ‘লুনার অ্যাটমস্ফিয়ার অ্যান্ড ডাস্ট এনভায়রনমেন্ট এক্সপ্লোরার’। তাহলে কি আগামী দিনে চাঁদে মানুষের দ্বিতীয় উপনিবেশ বানাতে বা ভিন গ্রহে যাওয়ার জন্য পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে ট্রান্সপোর্টেশন হাব গড়ে তোলার চিন্তাটা কমবে আমাদের? এ আবিষ্কার অনিবার্যভাবে সেই প্রশ্নেরই জন্ম দেয়।
উল্কার আচমকা আঘাতে চাঁদ থেকে পানির কণা বেরিয়ে আসবে তাত্ত্বিকভাবে তা বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল না। তবে চোখে না দেখতে পারলে বিজ্ঞান কিছুই বিশ্বাস করে না। ‘সিয়িং ইজ বিলিভিং’ এ প্রথম সেই চমকে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটলো।
সুইডেন থেকে নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) বিশিষ্ট বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা সত্যিই একটি মাইলস্টোন আবিষ্কার। অনেক দিন ধরেই বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, চাঁদের মাটির নীচে এখনও জল থাকতে পারে। সে জন্যই সম্প্রতি চাঁদ নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে নাসার। এ আবিষ্কার একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিল।’
নাসার বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায় আরও জানান, ‘লুনার ফ্লাশলাইট নামে নতুন একটি যন্ত্র বানানো হচ্ছে। সেটাও নাসার অ্যাডভান্সড এক্সপ্লোরেশান সিস্টেম এর অংশ হিসেবে চাঁদের মাটির নীচে থাকা জলের খোঁজখবর নেবে। উল্কার মতোই কৃত্রিমভাবে চাঁদে আঘাত হানার কথাও ভাবা হয়েছে। সেই অভিঘাতের ফলে চাঁদের মাটির নিচ থেকে যে জলের অণু ও হাইড্রোক্সিল আয়ন বেরিয়ে আসবে তার পরিমাণ মাপা হবে।