ভিভ রিচার্ডস, শচীন টেন্ডুলকার, শেন ওয়ার্নসহ আরও বেশ কিছু দুর্দান্ত ক্রিকেটার আছেন যারা সব ফর্মেটেই সাফল্য পেয়েছেন। কিন্ত কিছু খেলোয়াড় আছেন যারা টেস্ট ক্রিকেটে অসাধারণ রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন, সীমিত ওভারে নয়। এ সকল খেলোয়াড় মেধাবী এবং একজন চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার ছিলেন। তবে কখনোই ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি।
এদের মধ্যে অনেকের ভাগ্য সহায়তা করেনি এবং কতিপয় ছিলেন যারা বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার মত ছিলেন না। এমনই ৫ ক্রিকেটার হলেন-
১. এলিস্টার কুক (ইংল্যান্ড) :
২০০৬ সালে অভিষেক হওয়ার পর ১২ বছরের ক্যারিয়ারে ইংল্যান্ডের হয়ে ১৬১ টেস্ট খেলেছেন এলিস্টার কুক। ৪৫.৩৫ গড়ে ১২৪৭২ রানের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে তার। তারকা এ খেলোয়াড় সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নিতে এবং নিজস্ব ঢংয়ে খেলতে প্রস্তুত ছিলেন।
তবে তিনি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৯২টি। যেখানে ৩৬.৪০ গড়ে তার রান ৩২০৪। কুক ছিলেন কিছুটা ধীরস্থির প্রকৃতির। অর্থাৎ মাঠে নেমে থিতু হতে কিনি কিছুটা সময় নিতেন এবং আগ্রাসী ছিলেন না। সম্ভবত এ কারণেই তিনি কখনো বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি।
২. ভিভিএস লক্ষন (ভারত) :
একজন গ্রেট মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন ভিভিএস লক্ষন। যিনি শচিন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুরি এবং রাহুল দ্রাবিড়ের মত গ্রেটদের আমলে খেলেছেন। তিনি টেকনিক্যালি উঁচু মানের, প্রতিভাধর এবং আজহার উদ্দিনের মত চটপটে স্বভাবের জন্য পরিচিত ছিলেন।
১৯৯৬ সালে অভিষেক হওয়ার পর দীর্ঘ ১৬ বছর ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। ৪৫.৯৭ গড়ে ১৩৪ টেস্টে লক্ষণ ৮৭৮১ রান করেছেন। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে মধ্য মানের একজন খেলোয়াড় ছিলেন হায়দারাবাদেন এ স্টাইলস্ট ব্যাটসম্যান।
মাত্র ৩০.৭৬ গড়ে ৮৮ ওয়ানডেতে তার রান সংখ্যা ২৩৩৮। মূলত বিরেন্দার শেবাগ, যুবরাজ সিং এবং অন্য আক্রমনাত্মক খেলোয়াড়রা পছন্দের তালিকায় থাকার কারণেই তিনি কখনো বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলতে পারেননি।
৩. জাস্টিন ল্যাঙ্গার (অস্ট্রেলিয়া) :
অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা ওপেনারদের একজন ছিলেন জাস্টিন ল্যাঙ্গার। তিনি এবং ম্যাথু হেইডেন ১১৩ টেস্ট ইনিংসে জুটিবদ্ধভাবে ৫১.৮৮ গড়ে ৫৬৫৫ রান করেছেন। একজন কার্যকর ড্রাইভার এবং বল কাটার ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে ১০৫ টেস্টে ৪৫.২৭ গড়ে ল্যাঙ্গারের রান ৭৬৯৬।
তবে ওয়ানডেতে তিনি কখনোই সাফল্য পাননি। ল্যাঙ্গার মাত্র আটটি ওয়ানডে খেলেছেন এবং যে কারণে তিনি কখনোই অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি।
৪. ক্রিস মার্টিন (নিউজিল্যান্ড) :
২০০০ সালে অভিষেক হওয়ার পর দীর্ঘ ১৩ বছর নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ডান হাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার ক্রিস মার্টিন। ৭১ টেস্টে ৩.৩৭ ইকোনোমি রেটে এবং ৩৩.৮১ গড়ে ২৩৩ উইকেট শিকার করেন তিনি।
তবে ওয়ানডে দলে কদাচিত তিনি নির্বাচকদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। অর্থাৎ কখনোই বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাননি তিনি।
টেস্টে অনেক ম্যাচ খেললেও মাত্র ২০টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। সিমিত ওভারের ম্যাচে ৪৪.৬৬ গড়ে তিনি শিকার করেন ১৮ উইকেট। ইনজুরিতে পড়া ড্যালি টাফির বদলি হিসেবে একবার তাকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হয়েছিল। তবে কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি মার্টিন।
৫. ম্যাথু হগার্ড (ইংল্যান্ড) :
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হওয়ার পর আট বছর খেলেছেন ম্যাথু হগার্ড। এ সময়ে ৬৭ টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩.২৬ ইকোনোমি রেটে ৩০.০৫ গড়ে ২৪৮ উইকেট শিকার করেন তিনি।
তিনি ছিলেন অসাধারণ একজন টেস্ট খেলোয়াড়। কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেটে একই ধরনের সাফল্য তিনি পাননি। ২৬ ওয়ানডেতে ৩৬ গড়ে তিনি ৩২ উইকেট শিকার রয়েছে হগার্ডের।
দীর্ঘ দেহী এবং পেশীবহুল হওয়ায় তিনি দ্রুত গতিতে বোলিং করার পাশাপাশি উইকেটের যে কোন দিকে বল ঘুড়াতে পারতেন তিনি। ২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলে জায়গা পান তিনি। তবে কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি হগার্ড।