নুসরাত হত্যা: শিগগিরই অভিযোগপত্র জমা দেবে পিবিআই

ডেস্ক রিপোর্ট

নুসরাত জাহান রাফি
নিহত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। ফাইল ছবি

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় গুছিয়ে এনেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা পিবিআই। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় আসামি কেবল মহিউদ্দিন শাকিল ধরা পড়লেই অভিযানের ইতি টানা হবে। এর মধ্যে আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া এবং আরও কিছু প্রক্রিয়া শেষ করে পিবিআই অভিযোগপত্র দেবে বলে জানা গেছে।

গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় দুই তরুণীসহ পাঁচজন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে মারা যান তিনি।

এর আগে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় নুসরাতকে কৌশলে প্রশাসনিক ভবনের (সাইক্লোন শেল্টার) ছাদে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

universel cardiac hospital

নুসরাতের ওপর নৃশংস অগ্নি–সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলেও শুরু থেকে সোনাগাজী থানার পুলিশ রহস্যজনক আচরণ করছিল। বিশেষ করে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন একে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এতে বিভিন্ন মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠলে থানা–পুলিশের পরিবর্তে ১০ এপ্রিল তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা পিবিআইকে। দায়িত্ব নেওয়ার ৪০ ঘণ্টার মধ্যেই পিবিআই অন্যতম প্রধান দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীমকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর এই মামলার জট খুলে যায়। একে একে গ্রেপ্তার হন প্রায় সব আসামি।

পিবিআইয়ের প্রধান পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার জানান, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নুসরাত খুনের নির্দেশদাতা, অর্থদাতা, পরিকল্পনাকারী, বাস্তবায়নকারী, সহযোগী, আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতাদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে মোট ১৬ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ১৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি একজনের নাম তদন্তের স্বার্থে বলা যাচ্ছে না।

পিবিআই সূত্র জানায়, অন্যতম পরিকল্পনাকারী মহিউদ্দিন শাকিল এখনো গ্রেপ্তার হননি।

নুসরাত খুনের পরিকল্পনা ও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম ও নুর উদ্দিন দায় স্বীকার করে ফেনীর আদালতে জবানবন্দি দেন। ১৪ এপ্রিল দেওয়া তাঁদের জবানবন্দিতে উঠে আসে, হত্যার পরিকল্পনা ও হত্যাকাণ্ডের দিন পাহারার দায়িত্বে ছিলেন শাকিল।

পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানিয়েছেন, নুসরাত হত্যা মামলায় সন্দেহভাজনসহ মোট ২০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। ইতিমধ্যে আট আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে