বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রীদের বিচার করতে সরকার বদ্ধপরিকর : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট

শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেলহত্যায় সহায়তাকারী ও ষড়যন্ত্রী খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে তার সরকার বদ্ধপরিকর বলে সংসদকে জানিয়েছেন।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে লক্ষ্মীপুর-১ আসনের আনোয়ার হোসেন খানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।


চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল এ দেশের মানচিত্র

সংসদ নেতা বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। ইতিহাসের সেই খলনায়করা শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, হত্যা করতে চেয়েছিল পৃথিবার বুকে লাল সবুজের অহংকার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এ রাষ্ট্রকেও। চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল এ দেশের মানচিত্রও।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেলহত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। শুধু এ ঘৃণ্য কাজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িতরাই নয়, সহায়তাকারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

আওয়ামী লীগ চতুর্থবার সরকার গঠন করার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার ষড়যন্ত্রের  অনেক তথ্য পায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব তথ্য থেকে দেখা যায়, পরোক্ষভাবে দেশি-বিদেশি কিছু লোক ও সংস্থা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অন্য পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে অন্যতম জেনারেল জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন এসব খুনিকে বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করে। এরপর জেনারেল এরশাদ ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বহাল রেখে এসব আত্মস্বীকৃত খুনিকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রাখে।

১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার কার্যক্রম শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একই সঙ্গে শুরু করা হয় জাতীয় চার নেতার জেলখানার অভ্যন্তরে নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার। কোনো বিশেষ আইনে অথবা কোনো বিশেষ আদালতে তাদের বিচার করা হয়নি। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে প্রচলিত আইনে হত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং আপিল শুনানি শেষে হত্যাকারীদের সাজা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব খুনি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে বা আশ্রয় গ্রহণ করে আছে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার সব প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ সংক্রান্ত একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। এখনও যেসব খুনি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে এবং আশ্রয় গ্রহণ করে আছে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে