রাশিয়ায় কিম, পুতিনের সঙ্গে বৈঠক বৃহস্পতিবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কিম-পুতিন
কিম-পুতিন। ফাইল ছবি

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাশিয়ায় পৌঁছেছেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। বুধবার ট্রেনে করে রাশিয়ার সীমান্তে ভ্লাদিভস্তক শহরে পৌঁছেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার এই শহরেই পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন বিশ্বের আলোচিত এই নেতা। কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে সহায়তা করতে চান পুতিন।

কোণঠাসা হলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্তর কোরিয়া যে একা নয়, সে দেশের নেতা কিম জং উন আবার তা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন৷ প্রতিবেশী ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশ চীনের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের পাশাপাশি আরেক প্রতিবেশী রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বদ্ধপরিকর কিম৷

কিম ট্রেনে করে ভ্লাদিভস্তকে পৌঁছলে সীমান্তের খাসান শহরে রাশিয়ার সরকার তাকে সাড়ম্বরে স্বাগত জানিয়েছে৷ বুধবার রাশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী ইউরি ত্রুটনেভ কিম জং উনের সম্মানে এক নৈশভোজের আয়োজন করেছেন৷ শুক্রবারই কিমের দেশে ফেরার কথা৷

universel cardiac hospital

২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে কিম জং উন জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা দেখাচ্ছেন৷ বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন৷ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে চার বার, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জা ইনের সঙ্গে তিন বার ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দুই বার ও ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক বার মিলিত হয়েছেন তিনি৷

পরমাণু কর্মসূচির কারণে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে পড়ে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে৷ ওয়াশিংটনের সমর্থন ছাড়া সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভিয়েতনামে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকে এ ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হাসিল করতে পারেননি কিম৷ একতরফাভাবে পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করতে এখনো প্রস্তুত নন তিনি৷

অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার আরও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখতে চায়৷ তারপরই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন৷

এমন প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে নতুন অস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি আবার নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছেন৷ এই অবস্থায় চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্কের পথে এগোনোর চেষ্টা করছেন কিম৷ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে এই দুই দেশ উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পক্ষে সওয়াল করছে৷

সাবেক পরাশক্তি হিসেবে রাশিয়ার নিজস্ব সমস্যাও কম নয়৷ প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার গৌরব আবার ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ কোরীয় উপদ্বীপের সংকটের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানসূত্রের লক্ষ্যে সে দেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী৷ ট্রাম্প-কিম বৈঠকে যে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা দিয়েছিল, তার উপর ভিত্তি করে পুতিন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে চান৷

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে