মন্ত্রীরা যা বলেন, সাথে সাথে তার উল্টোটা ঘটে: রিজভী

ডেস্ক রিপোর্ট

রিজভীর সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘মিডনাইট ভোটের সরকারের মন্ত্রীরা যা বলেন, সাথে সাথে তার উল্টোটা ঘটে। আজ বুধবার (সকালে) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ক’দিন আগে বানিজ্যমন্ত্রী ঘটা করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করেছিলেন- রমজানকে সামনে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়বে না। তার পরদিনই হু হু করে দাম বেড়েছে প্রায় সকল পণ্যের।’

তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবারেও পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি বিক্রি হয় ২৫ টাকায়। এর এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ২০ টাকায়। গতকাল সবকটি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৬ থেকে ২৭ টাকায়।

একইভাবে এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকায়। এখন তা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আলু প্রতি কেজি ১৬ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। প্রতি কেজি চিনি ৫২ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৯০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯৮ টাকায়।

এভাবে বেড়েছে ছোলা, ডাল, আদা, ময়দা, কাঁচামরিচসহ সবরকম নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। অল্প আয়ের মানুষরা রমজানের আগে আঁতকে উঠছে হু হু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের এই মূল্য বৃদ্ধিতে।

পবিত্র রমজানের প্রাক্কালে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকারকে ধিক্কার জানাই।’

রিজভী বলেন, অবৈধভাবে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা কখনোই জনস্বার্থ দেখে না, জনকল্যাণ করতে পারে না। সারা ঢাকা শহরে ওয়াসার দূষিত পানির সরবরাহে জনজীবন এখন ভয়ঙ্কর রকম সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নির্বিকার। বাড়িতে বাড়িতে টাইফয়েড, ডায়রিয়া, জ্বর মহামারি আকার ধারণ করেছে। এখন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো গরীব মানুষদের অবস্থা। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজে ওয়াসার পানি পান করেন না, অথচ তিনি বলছেন ওয়াসার পানি ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ।

তিনি বলেন, দেশে অনাচার-বিচারহীনতা, নারী-শিশু নির্যাতনসহ অপরাধ ও নিয়ম বহির্ভূত আচরণ এক ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে, এতে ভেঙে পড়েছে সমাজের বন্ধন। আর এই ভেঙে পড়ার কারণেই নৈরাজ্য চরম আকার ধারণ করেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে সংঘটিত পৈশাচিক অপরাধগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের জড়িত নেতাকর্মীদের শাস্তি দূরে থাক, এরা রেহাই পাচ্ছে এজন্য যে, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আইনসম্মত প্রতিষ্ঠান- যারা অপরাধ দমন করবে তাদের দিয়েই গণতন্ত্র হত্যা, ভোট লুণ্ঠন ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন করানো হয়েছে, সুতরাং এজন্যই সরকারের নিজেরই অপরাধ দমনের কোনো নৈতিক শক্তি নেই।

রিজভী বলেন, ‘এই সরকারের রাজমুকুটে শোভা পাচ্ছে বিরোধী মতের মানুষদের রহস্যময় অন্তর্ধান, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা। মধ্যরাতের ভোটের সরকারের প্রভাবেই সমাজে অপরাধপ্রবণতা বিশ্বের সকল দৃষ্টান্তকে অতিক্রম করেছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে