নতুন করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ হচ্ছে ৩২৯ উপজেলায়

ডেস্ক রিপোর্ট

টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ
টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ হচ্ছে ৩২৯ উপজেলায়। ছবি-সংগৃহিত

দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে কারিগরি শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এগুলো স্থাপনে ব্যয় হবে ২০ হাজার ৮৮৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি নিয়ে আগামী সোমবার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) বৈঠকে বসছে পরিকল্পনা কমিশন।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পিইসি সভায় সভাপতিত্ব করবেন কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আবুল কালাম আজাদ। এরপর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (এননেক) বৈঠকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর।

universel cardiac hospital

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ‘উপজেলা পর্যায়ে ৩৮৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীনভাবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তবে এর আগে হাতে নেয়া ‘১০০টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন’ নামের প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অগ্রগতি ভালো নয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সময়মতো বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে আগে থেকেই সতর্ক থাকার জন্য পিইসি সভায় তাগিদ দেয়া হতে পারে।

কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে জানান, প্রথম পর্যায়ে জমির জটিলতাই হচ্ছে মুখ্য। তবে আমরা এরইমধ্যে ৯৫টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ করেছি। ৫টির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটি যাতে এ সংক্রান্ত জটিলতায় না পড়ে সেজন্য আগে থেকেই ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম এগিয়ে রাখা হচ্ছে। যাতে প্রকল্পটি অনুমোদন পেলেই বেশ কিছু স্থানে ভবন নির্মাণ শুরু করতে পারা যায়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি একটি করে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সেই সঙ্গে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও এইচএসসি (ভোকেশনাল) কোর্স চালু করার মাধ্যমে দেশব্যাপী কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ করা হবে।

প্রকল্পের প্রস্তাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, দারিদ্র্য দূরীকরণ, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন ট্রেনিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ২০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

এ লক্ষ্য অর্জনে কারিগরি শিক্ষাকে গ্রাম পর্যায়ে সম্প্রসারিত করার জন্য কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ বিদ্যমান ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ১০০টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপন প্রকল্প দুটি হাতে নেয়। সেগুলো এখনও বাস্তবায়নাধীন। সেই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আরও বলা হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৮৯টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়।

সেসময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৮ হাজার ৫০১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মেয়াদ ধরা হয় ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটির ওপর গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সভায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ থাকায় ৬০টি উপজেলাকে বাদ দেয়ার সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে ৩২৯টি উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করে ব্যয় ২০ হাজার ৮৮৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ধরে নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ের এ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে