পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের বিচার প্রক্রিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনার পাঁচ বছর পূর্ণ হলো আজ। এত দিনেও এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহতদের স্বজনরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাত খুন মামলার রায় এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অপেক্ষমাণ। নিম্ন আদালতের রায় উচ্চ আদালত বহাল রাখায় প্রধান কয়েকজন আসামি আপিল বিভাগে যান। এরপর এ পর্যন্ত আর অগ্রগতি জানা যায়নি।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে অপহূত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। র‌্যাব-১১-এর তৎকালীন কিছু বিপথগামী সদস্য তৎকালীন কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে ওই সাতজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে মরদেহ ফেলে দেয়। কয়েকদিন পরে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে সাতটি মরদেহ।

আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি নিম্ন আদালতের দেয়া রায়ে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য আদেশ হাইকোর্টে আসে। এছাড়া দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ২৮ আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ১১ আসামির দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

এরপর গত মার্চের প্রথম দিকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন র‌্যাব-১১-এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানা ও সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন। মামলাটি এখন শুনানির তালিকায় ওঠার অপেক্ষায় আছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে আটজন পলাতক।

আপিল বিভাগেও হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে বলে আশা করছেন মামলা বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী বিউটি। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুধু সাতজন মানুষ নয়, সাতটি পরিবারকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমিসহ সবাই আতঙ্কে আছি। আমরা অপেক্ষায় আছি, হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে