বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন,’ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত (ইইউ) দেশসমূহের জন্য ব্যবসায় পরিবেশের উন্নতি ও বিনিয়োগ বাঁধা দূর করতে আবশ্যকীয় সেবা নিশ্চিত বা সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দফতরকে সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। সেই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সেবা নিশ্চিত করা হবে’।
রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ‘ইইউ-বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ডায়ালগ’ এর ৫ম রাউন্ডের বৈঠকশেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন,’ব্যবসা সহজীকরণ, অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুবিধা, দ্বৈত কর পরিহার, এক দরজায় সব সেবা প্রদান এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্প্রসারনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা করেছি। এর মধ্যে যে বিষয়টিতে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি, সেটি হলো সম্যাসার সমাধানে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কারণ ব্যবসায়ীরা তো আর সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপেক্ষায় বসে থাকতে পারে না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। এর জন্য আমরা সময় বেঁধে দিয়ে কাজ করতে চাই’।
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্কিং গ্রুপগুলো সেবা নিশ্চিত বা যেকোন ইস্যুর অগ্রগতির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেবে সংশ্লিষ্ট দফতরকে। সেই সময়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট সেবা প্রদান বা বাাঁধা দূর করতে হবে। আশা করি, পরবর্তী সংলাপের আগেই অনেক বিষয়ে অগ্রগতি হবে। ইইউর বাজারে এখন আমরা জিএসপি সুবিধা পাই। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশ হলে এই সুবিধা পাব না। তাই আমরা জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে চাই। এ সুবিধা পাওয়ার জন্য আমাদের ২৭টি কম্পোনেন্ট পূরণ করতে হবে। এসব কম্পোনেন্ট পূরণ করার ক্ষেত্রে ইইউর সহযোগিতা দরকার। একই সঙ্গে রফতানির বাজারে বৈচিত্র্য আনতে ইইউএর সহযোগিতা প্রয়োজন’।
বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম এবং ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিনকের যৌথ সভাপতিত্বে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইইউভূক্ত দেশসমূহের রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ইইউ এর রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা শুরু ক্ষেত্রে আইনি সংস্কার প্রক্রিয়া এখনও জটিল। নীতি কাঠামোর অনিশ্চয়তা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বল তদারকির মতো বাধাগুলো এখনও রয়ে গেছে। বাংলাদেশ যেহেতু উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হচ্ছে তাই তারা ২০২১ সালের মধ্যে মানসম্মত বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করবে বলে আশা করি’।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইইউভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশের রফতানির সবচেয়ে বড় অংশীদার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ইইউ দেশগুলোতে ২১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হয়,যা মোট রফতানির প্রায় ৫৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ইইউভুক্ত দেশে রফতানির ক্ষেত্রে ইবিএর (অস্ত্র ছাড়া বাকি সব পণ্য) আওতায় জিএসপি সুবিধা ভোগ করছে। তবে ইইউভূক্ত দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, সেসব সমস্যা সমাধানের লক্ষে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য ২০১৬ সালে ‘ইইউ-বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ডায়ালগ’ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এরই আলোকে সুনির্দিষ্ট বিষয় ও সেক্টরভিত্তিক ৫টি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়।