ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টটিগেশন (পিবিআই) যে তদন্ত করছে তাতে সম্পূর্ণভাবে আদালত সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনায় বিচারিক কমিশন চেয়ে রিট উপস্থাপনের পর আদালত এমন মন্তব্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ইউনুছ আলী আকন্দ।
পরে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, সবকিছু মিলিয়ে ওনাদের (পিবিআই) কাজ সন্তোষজনক প্রতীয়মান হয়েছে। ফলে একদিকে ওনারা (আদালত) চান না যে তদন্তে কোনো রকম আদালতের কোনো আদেশে সেটা প্রভাবিত হোক। আরেকটা হলো এখন পর্যন্ত সমস্ত বিষয় সুষ্ঠুভাবে চলছে। এ মুহূর্তে ওনারা (আদালত) হস্তক্ষেপের যৌক্তিক কারণ দেখছেন না।
এখন পর্যন্ত পিবিআই যে তদন্ত করছে সম্পূর্ণভাবে আদালত সন্তুষ্ট। এজন্য এ ব্যাপারে ওনারা হস্তক্ষেপ করছেন না। আরো এক সপ্তাহ দেখবেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে যে ইনফরমেশন আছে। আশাকরি দ্রুত রিপোর্ট (চার্জশিট) আসবে। ওনাদের (পিবিআই) সব রকমের স্বাধীনতা দেয়া আছে।
ইউনুছ আলী বলেন, আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, পিবিআই যথাযথ তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ওই মাদ্রাসার কমিটির বিরুদ্ধে একটি সম্পূরক আবেদন দিয়েছি। ইতোমধ্যে কমিটি বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করলেই হবে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করেছি। আদালত এটা রাষ্ট্রপক্ষকে দিতে বলেছেন।
গত ১৭ এপ্রিল ওই ঘটনা অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেছিলেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
ওই আবেদনে নুসরাতকে রক্ষায় অবহেলাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, ঘটনা অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন, ঘটনার বিচারে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, নুসরাতের পরিবারের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলাটির যাথযথ তদন্তে র্যাবের কাছে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য রাফিকে চাপ দেয় তারা।
পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া রাফিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত জাহান রাফি মারা যান।