আনন্দ ডাবগাছে উঠেছিলেন তীব্র তাপদাহে তৃষ্টা মিটাতে। কিন্তু এর পরিণাম যে মোটেও আনন্দজনক হয়নি। বরং ঘটেছে তুলকালাম। তৃষ্ণা মেটাতে প্রায় ২০০ ফুট লম্বা নারকেল গাছে উঠে মরতে বসেছিলেন আনন্দ কুমার দাস (৩০) নামের এক ব্যক্তি। কারণ গাছে উঠে তিনি নামতে পারছিলেন না।
তবে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও স্থানীয়দের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় এ যাত্রা প্রাণে বেঁচে যান তিনি। অনেক ঝামেলা মাড়িয়ে দীর্ঘ লম্বা নারকেল গাছের ডগায় আটকে পড়া আনন্দকে নিরাপদে মাটিতে নামিয়ে আনা হয়। এ সময় শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করে।
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা সদরে শনিবার এ ঘটনা ঘটে। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আনন্দ কুমার কুলিয়ারচর উপজেলার দাস পাড়া গ্রামের নিতাই কুমার দাসের ছেলে।
আনন্দ কুমার দাস বলেন, ডাব খাওয়ার জন্যই লম্বা নারকেল গাছে উঠেছিলেন।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে কুলিয়ারচর সদরে অবস্থিত কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ক্যাম্পাসের একটি লম্বা নারকেল গাছ থেকে ডাব পাড়তে যায়। গাছে উঠে কয়েকটি ডাব ছিঁড়ে নামতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। লম্বা গাছে উঠার পর তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তাই নিচে নামার সাহস ও শক্তি ছিল না তার শরীরে। আটকে পড়েন নারকেল পাতার গোড়ায়!
দুপুর দেড়টার দিকে কয়েকজন পথচারির নজরে পড়ে নারকেল গাছের ডগায় কেউ একজন আটকে আছেন।
খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে। খবর পেয়ে কুলিয়ারচর ফায়ার সার্ভিসের ৭ সদস্যের একটি দল ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। কিন্তু নারকেল গাছের উচ্চতা বেশি হওয়া তাদের লেডারে কোনো কাজ হচ্ছিল না। এ অবস্থায় খবর দেয়া হয় বিদ্যুৎ বিভাগকে। ছুটে আসে পুলিশও। অবশেষে বিদ্যুৎ বিভাগের মই ও ফায়ার সার্ভিসের লম্বা দড়ির সাহায্যে প্রায় দুই ঘণ্টা পর আনন্দ কুমার দাসকে উদ্ধার করে নামিয়ে আনা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া কুলিয়ারচর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. আবুল কালাম বলেন, নারিকেল গাছে কেউ আটকা পড়ার ঘটনা এটাই প্রথম। আমারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ২০০ ফুট ওপর থেকে নামানোর মতো আমাদের কোনো লেডার নেই। তাই বিদ্যুৎ বিভাগের মই দিয়ে এবং আমাদের লম্বা রশির সাহায্যে তাকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়।