চাকরিতে প্রবেশের বয়স না বাড়ালে সারাদেশে অবরোধের হুমকি

ডেস্ক রিপোর্ট

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন (ফাইল ছবি)
চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন (ফাইল ছবি)

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা না হলে সারাদেশে অবরোধের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। তবে এখনই নয়, রমজানের ঈদের পর এই দাবিতে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়ার কথা বলছেন আন্দোলনকারীরা। 

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ।

সরকারি চাকরিতে যোগদানের বয়স ৩৫ করা যাবে না- জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের এমন বক্তব্য ‘ডাহা মিথ্যা’ ছাড়া আর কিছু নয় বলেও দাবি করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ।

universel cardiac hospital

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমরা জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ন্যূনতম ৩৫ বছর করার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, যদি আগামী রোজার ঈদের আগে এ সিদ্ধান্ত না নেয়া হয়, তাহলে ঈদের পর অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়া হবে।’ সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য ৩৫ প্রত্যাশীদের মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

‘প্রতিমন্ত্রী সংসদে দেয়া বক্তব্যে বর্তমান সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়সসীমা সবদিক বিবেচনা যৌক্তিক বলে মনে করেছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট নেই, ২৩ বছর বয়সে শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাচ্ছেন। সংবিধান ও চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী পূর্ণ পেনশন পাওয়ার জন্য ২৫ বছর চাকরি করতে হয়। কেউ যদি ৩৫ বছর বয়সে চাকরিতে যোগ দেয় তাহলে ২৫ বছর পূর্ণ করতে হলে তাকে ৬২ বা ৬৩ বছর বয়সে অবসরে যেতে হবে। কিন্তু বর্তমানে অবসরের বয়স ৫৯ বছর। তাই আইন অনুযায়ী প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সুযোগ নেই।’- প্রতিমন্ত্রীর এমন কথা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

হারুন বলেন, ‘জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য আংশিক সত্যের অপলাপ এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো ছাড়া আর কিছু নয়। সেশনজটসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ২৪ এপ্রিল নীলক্ষেত মোড়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছিল।

তাছাড়া ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মাস্টার্স পরীক্ষায় সেশনজট ছিল গড়ে তিন বছর। কাজেই সেশনজট না থাকার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোটাই সত্যের অপলাপ। সেশনজটের উল্লিখিত পরিসংখ্যান প্রতিমন্ত্রী না জেনে থাকলে সেটি তার অজ্ঞতা এবং আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য।’

‘সরকারের সবকিছুই চলে বিধি বিধানের আলোকে। সংবিধান ও চাকরির বিধিমালা পবিত্র কোরআন নয় যে তা পরিবর্তন করা যাবে না।’

প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা আছে, সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন। অথচ বাংলাদেশে একই ভূখণ্ডে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ভিন্ন ভিন্ন হওয়াটা কি সংবিধান পরিপন্থী নয়?’

‘দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ২০১৫ সালে শিক্ষিত বেকার ছিল ২.৫০ মিলিয়ন, ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৭০ মিলিয়নে এবং বর্তমানে ২.৮০ মিলিয়ন।

সব রকম যোগ্যতা থাকার পরও তারা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছে না। চাকরি না পেয়ে রাজবাড়ীতে এক তরুণ রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে, খিলগাঁও রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের নিচে মাথা দেয়, ঢাবির বহুতল ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে। একবার ভাবুন তো হতাশাগ্রস্ত এসব তরুণ যদি শাহবাগ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দেয় তবে আপনাদের কী হবে?’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে