গাজীপুরে ছয়দিন আগে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের পর তাদের চলন্ত ট্রেনে থেকে ফেলে দেয়া হয় বলে এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে তিনজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মানিকগঞ্জের হাররামপুর থানার দুচরিয়া এলাকার কাশেম মিয়ার ছেলে মো. মোশারফ হোসেন (২৫), কিশোরগঞ্জের হোসেন পুর থানার গোবিন্দপুর এলাকার কাঞ্চন আকন্দের ছেলে মো. রিংকন আকন্দ ওরফে রানা আকন্দ (২৮), গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানার বৌ-বাজার এলাকার জুয়েল মিয়ার ছেলে মো. রবিন (১৮), কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থানার ভাণ্ড দুলাল মিয়ার বাড়ি এলাকার মো. ওমরাহানের ছেলে মো. নয়ন মিয়া (২০)।
ঢাকা রেলওয়ে পুলিশের এসপি মোহাম্মদ মহিউল ইসলাম জানান, গত ২৩ এপ্রিলের এ ঘটনায় রবিন, নয়ন ও মোশারফ ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোমবার জবানবন্দি দেন। আর রিংকনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইদিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান জানান, জয়দেবপুর জংশন পুলিশ গত ২৩ এপ্রিল রাতে ও ২৪ এপ্রিল সকালে গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম রেলওয়ে স্টেশনের পাশ থেকে রিকশা চালক সাইফুল মোল্লা (৩৮) ও নিরাপত্তাকর্মী হারুন মিয়ার (৩০) লাশ উদ্ধার করে।
সাইফুল পাবনার চাটমোহার থানার শিবপুর এলাকার মো. হাসানের ছেলে এবং হারুন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার আনহলা গ্রামের লেবু সরকারের ছেলে। এ ঘটনায় সাইফুলের বড় ভাই মো. মফিজুল বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে ২৮ এপ্রিল কমলাপুর থানায় মামলা করেন।
এসআই বলেন, মামলার তদন্ত চলাকালে রোববার সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ মোশারফকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তার দেয়া তথ্যে গাজীপুর ও টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, গত ২৩ এপ্রিল রাত ৯ টার দিকে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসের পেছনের বগির ছাদে ওঠেন তারা। ট্রেনটি টঙ্গী স্টেশন পার হওয়ার পর তারা পাশের বগির ছাদের উপর চারজন যাত্রী দেখে সেখানে যায় এবং তাদের নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে।
তিনি বলেন, এক পর্যায়ে শাহিন ও সাগর কাছে থাকা ছুরি দেখিয়ে যার কাছে যা আছে তা দিতে বলে। এ সময় দুই যাত্রী দৌড়ে অন্য বগির ছাদে চলে যায়। পরে সাইফুল ও হারুনকে জিম্মি করে মোবাইল ও টাকা-পয়সা দিতে বলা হয়; তারা রাজি না হওয়ায় তাদের মারধর করা হয়। পরে শাহিন, সাগর ওই দুইজনের কাছে থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে ধাক্কা মেরে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে দেয়।
পরে তারা জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেমে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে করে আবার ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে ফিরে আসে বলে জানান এসআই।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত বাকিরা পলাতক রয়েছে; তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।