জামিনের শর্ত অমান্য করায় যুক্তরাজ্যে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ৫০ সপ্তাহ বা ৩৫০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। দেশটির স্থানীয় সময় আজ বুধবার (১ মে) লন্ডনের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্ট এই রায় দেয়। খবর আরটির।
আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে ইকুয়েডরের দূতাবাসে পালানোর কারণ দেখাতে গিয়ে এদিন অ্যাসাঞ্জ বলেন, ওই সময় আমার যা মনে হয়েছে আমি তাই করেছি। তখন এই সিদ্ধান্তই আমার কাছে সেরা মনে হয়েছিল।
তবে অ্যাসাঞ্জের কথায় বিচারক ডেবোরা টেইলরের মন গলেনি। তিনি বলেন, অ্যাসাঞ্জ দূতাবাসে লুকিয়ে যুক্তরাজ্যের আইন ভঙ্গের ভয়াবহ নজির স্থাপন করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে জোর করে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ। অস্ট্রেলীয় নাগরিক অ্যাসাঞ্জের প্রতিষ্ঠিত উইকিলিকস গোপন মার্কিন গোপন নথি প্রকাশ করে আলোচনায় এসেছিল ২০১০ সালে। তার ওপর ক্ষুব্ধ হয় যুক্তরাষ্ট্র। সে বছরই দুই সুইডিশ নারীকে যৌন হয়রানির (সম্মতি কিন্তু অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের) অভিযোগে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ডিসেম্বরে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হয় লন্ডনে এবং জামিনে মুক্তি পান তিনি। তবে তাকে নজরবন্দি করে রাখার নির্দেশ আদালত। এরপর, ২০১১ সালে অ্যাসাঞ্জ আপিল করেছিলেন যাতে তাকে সুইডেনের কাছে প্রত্যর্পণ করা না হয়, তবে আদালত তা খারিজ করে দেন।
সুইডেনে গ্রেফতার এড়াতে অ্যাসাঞ্জকে তৎকালীন ইকুয়েডর প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেরা তার দেশের লন্ডন অ্যাম্বাসিতে ২০১২ সালে থাকার সুযোগ করে দেন। সে থেকেই লন্ডনের ইকুয়েডর অ্যাম্বাসিতে শরণার্থীর আশ্রয়ে থেকেছেন অ্যাসাঞ্জ। প্রায় সাত বছর ধরে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে শরণার্থীর আশ্রয়ে ছিলেন তিনি।
তবে ইকুয়েডরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলায়। বর্তমান ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চান বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি অ্যাসাঞ্জের শরণার্থী মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিলে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় লন্ডন পুলিশের। অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যর্পণ করা হতে পারে।