অগ্নিকাণ্ডে সর্বস্ব হারিয়ে যখন অসহায় একটি পরিবার- তখনই ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা। এরপর তাদেরকে কয়েকটি কম্বল দেন তিনি। কিন্তু এই গরমে কম্বল কেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। আসলেই তো ভাববার বিষয়, এই গরমে কম্বল কেন দিয়েছিলেন তিনি?
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার নাম জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। কেন কম্বল দিয়েছিলেন অগ্নিকাণ্ডের শিকার ওই পরিবারকে- কৈফিয়ত দিলেন নিজেই।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানানো বার্তায় ইউএনও জুবায়ের বলেন, হ্যাঁ, আমিই সেই ইউএনও, যিনি তীব্র গরমে আগুনে পুড়ে সর্বস্ব হারানো পরিবারকে সাহায্য হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে কম্বল বিতরণ করে ‘মহা অপরাধ’ করেছি। ঘটনাটি যেদিন ঘটে ওই দিনই আমি জানতে পারি ফেসবুকের মাধ্যমে, কালক্ষেপণ না করে ছুটে যাই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে, গিয়ে দেখি পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই তাদের।
তিনি বলেন, আমি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কয়েকটি কম্বল দিই অন্তত রাতে এটা বিছিয়ে শুতে পারে। এবং নতুন ঘর তৈরি করার জন্য সহযোগিতার আশ্বাস দিই। তখন আমার মাথায় ছিল কিভাবে দ্রুত এদের পুনর্বাসন করা যায়। দিনটি ছিল শনিবার যার কারণে অন্য কোনো সরকারি সাহায্য (যেমন টিন, নগদ টাকা) দেয়া ওই মুহূর্তে সম্ভব ছিল না এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে তাদের সহযোগিতার পরামর্শ দিই। পরিস্থিতি আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ফোনে ও লিখিতভাবে অবহিত করি।
জুবায়ের বলেন, পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সহযোগিতায় তাদের নতুন ঘর তৈরি করার জন্য ৪ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ১২ হাজার টাকা প্রদান করা হয় এবং উপজেলা থেকে তাদের স্কুলপড়ুয়া ২টি সন্তানকে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়। একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে আইনের মধ্য থেকে যতটুকু করা যায় আমরা তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।
তাদের অবস্থা দেখে মনে হয়েছিল- অন্তত ওই মুহূর্তে কিছু পাক। অন্য কোনো ব্যাপার তখন আমার মাথায় আসেনি। আমি তখন বুঝতে পারিনি এই ‘অপরাধের’ কারণে আমাকে এত বড় কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হবে।
আরো জানা যায়, জুবায়ের হোসেনের কম্বল দেয়ার ছবিকে ‘কম্বল বিতরণ’ এর ছবি বানিয়ে প্রথমে স্থানীয় কয়েকটি পোর্টাল ‘খবর’ বানায় এরপর তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে ইউএনও ব্যাপকভাবে সমালোচনার শিকার হন।