বিএনপির সংসদ সদস্যদের স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি

সংসদে প্রধানমন্ত্রী
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে সংসদে যোগ দেয়া বিএনপির সংসদ সদস্যদের স্বাগত জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি তাদের কাছে গঠনমূলক সমালোচনা প্রত্যাশা করেছেন।

শেখ হাসিনা সংসদের প্রতি মানুষের আস্থা যেন আরও বাড়ে সে ব্যাপারে সবাইকে ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন।

universel cardiac hospital

মঙ্গলবার রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।

গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে কয়েকবার ক্ষমতায় থাকা বিএনপি মাত্র ৬টি আসন পায়। জোটের দুজনসহ তাদের সদস্যসংখ্যা দাঁড়ায় আটে।

তবে এই নির্বাচনে সীমাহীন কারচুপি ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে বিএনপি ও তাদের জোট ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে নতুন নির্বাচন দাবি করে। বিজয়ী সদস্যরা শপথ নেবেন না বলেও জানানো হয়।

তারপর প্রথমে গণফোরামের দুজন শপথ নিয়ে প্রথম অধিবেশনে যোগ দেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে এসে প্রথমে বিএনপির একজন এবং শেষ মুহূর্তে এসে আরও চারজন সাংসদ শপথ নেন।

মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বিএনপি থেকে বিজয়ী সবাই শপথ নিয়ে সংসদে গিয়েছেন। ফখরুল শপথ না নেয়ায় ইতিমধ্যে তার আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।

শপথ নিয়ে সোমবারই বিএনপির সাংসদরা সংসদে যোগ দেন। সেদিন দলের কেন্দ্রীয় নেতা হারুন অর রশিদের দেয়া বক্তব্যে সংসদে বেশ উত্তাপ সৃষ্টি করে। তিনি দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি এবং নতুন নির্বাচন দাবি করেন।

মঙ্গলবার শেষ দিনে বিএনপির সাংসদরা অধিবেশনে যোগ দেন। তাদের কেউ কেউ কথাও বলেন। এদিন স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করে তাদের পাঁচজনকে সদস্য করা হয়েছে।


চাকরিতে প্রবেশের বয়স না বাড়ানোর ব্যাখ্যা

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চাকরিতে ঢোকার বয়স বাড়ানোর দাবি করা হচ্ছে। ৩৫ বছরে যদি কেউ পিএসসিতে পরীক্ষা দেয়; ওই পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্ট হয়ে চাকরিতে ঢুকতে ঢুকতে ৩৮ বছর হবে। ৩৮ বছর বয়সে একজন চাকরিতে ঢুকবে আবার কেউ কেউ ২২ বছর বয়সে একই চাকরিতে ঢুকবে। কত বছর ডিফারেন্সে দুইজন একসঙ্গে চাকরিতে ঢুকবে? এটা কি তারা চিন্তা করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরাতো ইতিমধ্যে অবসরে যাওয়ার বয়স ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করেছি। যে ৩৮ বছরে চাকরিতে ঢুকবে সে ২২ অথবা ২৩ বছর চাকরি করতে পারবে। সে কিন্তু পূর্ণ পেনশন পাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জন্ম থেকে মেধা বা উদ্যম বা তারুণ্য বা সৃজনশীলতাটা সবথেকে বেশি থাকে ২৪ কিংবা ২৫ বছর বয়সে। ২১ বছরেই একজন মানুষ পূর্ণ মানুষ বলা হয়। ২১ বছর থেকেই একজনের পূর্ণতা পায়। ২১ থেকে ২৫ বছরই সবচেয়ে কর্মদক্ষতা থাকে। এই সময়টা কোথায় যাবে। একটা মানুষের সবচেয়ে মূল্যবাদ সময়টা ওরা কী করবে?


মানুষ হত্যা করে তারা কীভাবে বেহেশতে যাবে?

সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তি চাই, সমৃদ্ধি চাই। এখানে আমার দুঃখ লাগে ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে কিছু মানুষকে ধর্মান্ধ করে ফেলা হয়। তাদেরকে ব্যবহার করা হয়। তাদের ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করা হয়। আমার এখানে একটা প্রশ্ন জাগে যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করে চিন্তা করে যে তারা বেহেশতে যাবে, এটা কীভাবে চিন্তা করে? মানুষ হত্যা মহাপাপ। আর যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করে তারা কীভাবে বেহেশতে যাবে?

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে