ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাব মোকাবিলায় সম্ভাব্য আক্রান্ত ১৯ জেলার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১০টা থেকে এসব মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।
এছাড়া ফনির আঘাতে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্যও সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
এসময় জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় ফনির আঘাতে যেন প্রাণহানি না ঘটে, সেজন্য সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে। একইসঙ্গে সম্পদের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্যও প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফনির ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করি, আমরা যথেষ্ট সক্ষমতার সঙ্গে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলা করতে পারব।
মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেলেও তাদের ঘরবাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে বলেছেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাইক্লোন সেন্টারে মানুষজন আশ্রয় নেওয়ার পর বাড়িঘর পাহারা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
তবে, আগুনজনিত দুর্ঘটনা রোধে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোমবাতির বদলে সৌর বিদ্যুৎ ও হ্যাজাকের ব্যবস্থা রাখা হবে।
ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের হতাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই
ডা. এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের হতাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে ১১ হাজার হেক্টর জমির ধান হয়তো রক্ষা করা যাবে না।
এছাড়া, এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য-উপাত্ত এসেছে, তার ওপর ভিত্তি করে মনে হচ্ছে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভার পর প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ফনির বর্তমান অবস্থান ও গতিবিধি দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দফতর, অধিদফতর সার্বক্ষণিক মনিটর করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে। এই কাজে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকেও মাঠ পর্যায়ে কাজে লাগানো হয়েছে।
ওই সময় মন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় ফনি প্রথমে ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানবে। বিকেল/সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরায় আঘাত হানতে পারে।
ফনি নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য আদান-প্রদান চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভারতে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিলে সিংগাপুর, থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ সেখানে সহায়তা পাঠাবে। বাংলাদেশও তেমনভাবে আক্রান্ত হলে এসব দেশ বাংলাদেশেও সহায়তা পাঠাবে।
উপকূলীয় জেলাগুলোতে গৃহীত প্রস্তুতির তথ্য জানিয়ে বলা হয়, উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে ২০০ টন করে চাল ও প্রতিটি জেলার জন্য ৫ লাখ নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া উপকূলীয় জেলাগুলোতে ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে। মোট এক লাখ ৪৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবীসহ মেডিকেল টিমগুলোকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।