পাকিস্তানের সরকারি হাসপাতালে মরণ ব্যধি এইচআইভি দূষিত সিরিঞ্জ ব্যবহার করে ৯০ জন রোগীর শরীরে এইডসের জীবাণু ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন মুজাফফর ঘাংরো নামে এক চিকিৎসক। এইচআইভি সংক্রমিত এই মানুষদের মধ্যে ৬৫ জনই শিশু৷
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলার পুলিশ প্রধান কামরান নওয়াজ বলেন, “স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছি। আমাদের বলা হয়েছে তারও এইচআইভি রয়েছে।”
গত সপ্তাহে লারকানার উপকণ্ঠে ১৮ শিশুর শরীরে এইচআইভি ধরা পড়ার পর টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগ বড় পরিসরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালালে সংখ্যাটি কয়েক ডজন বেড়ে যায়৷
লারকানার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুল রেহমান বলেন “পরীক্ষায় ৯০ জন এইচআইভি পজিটিভ হয়েছে৷ তার মধ্যে ৬৫জন শিশু।”
একজন চিকিৎসকের কারণেই অন্তত ৯০ জনের দেহে এইচআইভি ছড়ানোর বিষয়টি বেরিয়ে আসে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই চিকিৎসক জীবাণুযুক্ত সিরিঞ্জ ব্যবহার করেছেন বলে ধারণা তাদের৷
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে চিকিৎসক মুজাফফর ঘাংরো বলছেন, এটা তার বিরুদ্ধে সিন্ধু স্বাস্থ্য কমিশনের ‘ষড়যন্ত্র’।
নিজের এইচআইভি সংক্রমণ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না বলেও দাবি করেন তিনি।
থানা হাজতে সাংবাদিকদেরওই চিকিৎসক বলেন “সিন্ধু স্বাস্থ্য কমিশন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে৷ আমি যদি জানতাম আমার এইচআইভি/এইডস আছে, তাহলে নিশ্চয় চিকিৎসা নিতাম।”
পাকিস্তানের জিও নিউজ জানিয়েছে, ২০০৬ সালে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলেও ১৩ বছর ধরে সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন ডা. মুজাফফর ঘাংরো।
প্রদেশটির এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কর্মকর্তা সিকান্দার মেমন জানান, পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধু প্রদেশে এক লাখের বেশি এইচআইভি পজিটিভ লোক আছেন৷
তবে সরকারিভাবে নিবন্ধিত রোগীর সংখ্যা মাত্র ১০ হাজার ৩৫০ জন৷
নিবন্ধিত দুই হাজার ৪০০ জন রোগী নিয়ে এইডস আক্রান্তের দিক থেকে সিন্ধু প্রদেশে শীর্ষে রয়েছে লারকানা জেলা
১৯৮০-র দশকে প্রথম এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে সাত কোটি ৬০ লাখ এইডস সংক্রমিত ব্যক্তিকে পাওয়া গেছে৷ চিকিৎসা আবিষ্কার না হওয়া এই রোগে এ পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ৷